ভাত ও রুটি একসঙ্গে খাওয়া কি উপকারী?

অনেকেই ভাতের সঙ্গে রুটি খেয়ে থাকেন। অধিকাংশ বাড়িতেই ভাত ও রুটি মিলিয়ে খাওয়া হয়। এখন যারা ওজন কমাতে ডায়েট করছেন, তারা এক কাপ ভাত আর রুটি মিলিয়েই খান। কিন্তু কথা হলো, ভাত ও রুটির মতো দু’ধরনের কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কি একসঙ্গে মিলিয়ে খাওয়া স্বাস্থ্যকর?
ভাতের সঙ্গে রুটি মিলিয়ে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এমনটাই মত অনেক পুষ্টিবিদেরই। এই বিষয়ে পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী আনন্দবাজার অনলাইনকে বলছেন, ‘রুটি ও ভাত দু’য়ের মধ্যেই কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা বেশি এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও (শরীর কত দ্রুত খাদ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেটকে গ্লুকোজে রূপান্তরিত করে) বেশি। দুটি একসঙ্গে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে বাধ্য। ডায়াবেটিসের রোগীরা অনেক সময়েই ভাত ও রুটি মিলিয়ে খান। কিন্তু এইভাবে খাওয়া স্বাস্থ্যকর নয়।’
এক কাপ ভাতের সমান একটি রুটি। যদি কেউ এক কাপ ভাতের সঙ্গে দু’টি রুটি খান, তাহলে একবারে ৫০০ গ্রামের মতো কার্বোহাইড্রেট শরীরে প্রবেশ করবে। কিন্তু একজন প্রাপ্তবয়স্কের ক্ষেত্রে দৈনিক কার্বোহাইড্রেট পরিমাপ ১৩০-১৪০ গ্রাম হওয়া উচিত। তাই ভাত ও রুটি একসঙ্গে খেলে তা বেড়ে যাবে। এতে হজমের সমস্যাও হতে পারে। ভাত হজম হয় খুব তাড়াতাড়ি। কিন্তু রুটি হজম হতে দেরি হয়। যদি একই সময়ে দু’টি একসঙ্গে কেউ খান, তাহলে হজমপ্রক্রিয়া ধীর গতিতে হবে। ফলে পেটফাঁপা, গ্যাস-অ্যাসিডিটির সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।
পুষ্টিবিদের মতে, রুটি খেলে অনেকেরই অ্যাসিডিটির সমস্যা হয়। তাই কেবল ভাত খেয়ে ওজন বাড়ছে ভেবে তারা রুটির সঙ্গে ভাত একসঙ্গে খান। এমন করলে অ্যাসিডিটির সমস্যা আরও বাড়বে। তার চেয়ে এক কাপ ভাত অথবা একটি রুটি খাওয়া ভাল। যদি দু’রকমই খেতে হয়, তাহলে মাঝে ৪-৫ ঘণ্টার বিরতি থাকা জরুরি। যেমন, যদি সকালের নাশতায় রুটি-তরকারি খান, তাহলে আর দুপুরে ভাত-রুটি মিলিয়ে খাবেন না। অল্প করে ভাত আর বেশি করে সবজি খাবেন। এতেই শরীরে কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও খনিজ উপাদানগুলোর ভারসাম্য সঠিক থাকবে।
উচ্চ কোলেস্টেরল, হাইপারটেনশনে যারা ভুগছেন, তাদেরও ভাত-রুটি মিলিয়ে খাওয়া উচিত নয়। তার চেয়ে ব্রাউন রাইস, ওটস খেতে পারেন।