ব্রণ কমাবেন কীভাবে?
বয়ঃসন্ধি থেকে প্রবীণ, সবারই ব্রণ হতে দেখা যায়। ব্রণ দূর করতে করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৯০তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. জেসমিন মনজুর।
বর্তমানে তিনি কো-অডিনেটর ডিপার্টমেন্ট অব ডার্মাটোলজি এবং লেজার সেন্টার, অ্যাপোলো হসপিটালে ডার্মাটোলজি বিভাগে জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : ব্রণকে কি কোনো পর্যায়ে আপনারা ভাগ করেন?
উত্তর : আমরা পারিবারিক ইতিহাস নেই। জিনগত বিষয়টি কিন্তু এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তো আমরা ইতিহাস নেই, এরপর চিকিৎসা শুরু করি। অনেকে মনে করি ব্রণ শুধু মুখে হয়। তবে ব্রণ পিঠে হয়, বাহুতে হয়। ব্রণ হালকা থেকে একেবারে জটিল পর্যন্ত হতে পারে। ব্রণের আরো কিছু জটিল বিষয় রয়েছে। তো প্রথম যখন রোগী আসে আমরা পারিবারিক ইতিহাস নেই। তাদের বুকে রয়েছে, নাকি পিঠে রয়েছে দেখে নেই। আরো কোথাও রয়েছে কি না দেখি। দেখার পর আমরা পর্যায়ে ভাগ করি। এরপর আমরা রোগীকে প্রতিদিনকার ত্বকের যত্নের বিষয়টি বলে দেই। ব্রণের রোগীদের ত্বক সাধারণত তৈলাক্ত হয়। তাদের একটি হালকা সোপ ফ্রি ফেসওয়াস দেওয়া হয়। আমরা তাদের ওয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার দেই।
আসলে ময়েশ্চারাইজার কেবল শুষ্ক ত্বকের জন্য নয়, তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ওয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার দেওয়া হয়। এরপর তাদের ওয়েল ফ্রি সানব্লক দিয়ে দেই। কিছু ওষুধ দিয়ে দেই।
এর পরের পর্যায়ে রোগীকে কিছু পরীক্ষার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। ব্রণটা কেন হয়েছে, সেটি দেখি। ছেলেদের হরমোন তো সবসময় ব্রণ তৈরি করে। আর মেয়েদের বেলায় পিসিওস বলে একটি বিষয় রয়েছে, তাদের হরমোন ভারসাম্যহীন হয়। তাদের ওভারির মধ্যে ছোট ছোট সিস্ট থাকে। শুধু ব্রণের চিকিৎসা করলে হবে না, পেছনে যদি হরমোনের ভারসাম্যহীনতা থাকে, এগুলোকেও চিকিৎসা করতে হবে। হরমোনের সমস্যা যদি থাকে, একে বের করতে হবে। এর চিকিৎসা করতে হবে। আমরা যদি না পারি তাহলে হরমোন বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠাতে হবে।
রোগীদের জীবনযাপনের ধরন কীরকম হবে, কী কী ব্যবহার করবে, সেগুলোও চিকিৎসকদের বলে দিতে হবে। অনেকে সারা রাত তেল মাথায় দিয়ে থাকে, এতে ব্রণ হতে পারে।
প্রশ্ন : ব্রণ দূর করতে জীবনযাপনের ধরনের ক্ষেত্রে কী পরিবর্তনের কথা আপনারা বলেন? সেই সঙ্গে ওষুধগুলো কী দেন?
উত্তর : ব্রণের রোগীদের কেবল ওষুধ নয়, তারা কী ব্যবহার করবে এ বিষয়েও সচেতন করা হয়। চিকিৎসকের এই পরামর্শ দেওয়া উচিত।
পরীক্ষা যখন শেষ হয়ে যায়, আমরা বুঝে নেই কোন ধরনের ব্রণ, তখন আমরা চিকিৎসার পরিকল্পনা শুরু করি। যদি বেশি ব্রণ হয় তখন কেবল ত্বকে লাগানোর ওষুধ যথেষ্ট। যদি বেশি ব্রণ হয়, তাহলে ত্বকে লাগানোর ওষুধ তো দিতেই হবে, দৈনন্দিন যত্নের ব্যবহার্য বিষয় তো দিতেই হবে, পাশাপাশি খাওয়ার ওষুধ খাওয়াতে হবে। আর যদি পিসিওস থাকে, এর জন্য ওষুধ দিতে হয়। তার যদি থাইরয়েডের সমস্যা থাকে, এর জন্য ওষুধ দেওয়া হয়।
ক্ষত দূর করতে প্রথমে আমরা ব্রণটা সারানোর ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেই। আর কালো দাগ তো আছেই। অনেকে আবার খুঁটায়। যাদের মুখে ব্রণ থাকে, তাদের আমি ফেসিয়াল করতে নিষেধ করি। ফেসিয়াল করলে সংক্রমণ আরো ছড়িয়ে যায়, আরো বেশি ক্ষত হয়। অনেক সময় পার্লারে গিয়ে তারা সেটি বের করে, এতে আরো ক্ষত হয়ে যায়। খাদ্যাভ্যাসের তেমন কোনো গুরুত্ব ব্রণের ক্ষেত্রে নেই।