রক্তস্বল্পতা কখন বলা হয়?
শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে গেলে রক্তের ঘাটতি হয়। তবে কোন পর্যায়ে গেলে একে রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা বলা হয়?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৮৭তম পর্বে কথা বলেছেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. সালাহ উদ্দিন শাহ্। বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : এনিমিয়াকে আপনারা কীভাবে ব্যাখ্যা করেন?
উত্তর : আমরা যখন দেখি একজন হঠাৎ করে ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে, কেউ কেউ বলে আপনি তো ফর্সা হয়ে গেছেন। কিন্তু এটা না ভেবে আমাদের ভাবতে হবে হঠাৎ করে ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে কেন। তখন যদি আমরা একটি সাধারণ সিবিসি পরীক্ষা করি, দেখতে পাব যে তার হিমোগ্লোবিনটা কমে গেছে। হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার পর একটি স্বাভাবিক চিন্তা আসে যে হিমোগ্লোবিন কমে গেল কেন। বন্ধু-বান্ধব হয়তো পরামর্শ দেয়, তুই আয়রন জাতীয় খাবার বেশি করে খাস না। আবার আয়রন জাতীয় খাবার বেশি করে হয়তো খেয়েও রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
রক্তশূন্যতা কখন বলা হয়? হিমোগ্লোবিনের একটি সাধারণ মাত্রা রয়েছে, এর নিচে যখন চলে আসবে, তখনই আমরা তাকে রক্তস্বল্পতা বলি। মেয়েদের ক্ষেত্রে ১১ দশমিক ৫ থেকে ১২ দশমিক ৫, কখনো কখনো ১৩ পর্যন্ত স্বাভাবিক মাত্রা। ছেলেদের ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৪ অথবা ১৬ গ্রাম পর্যন্ত আমরা স্বাভাবিক মাত্রা বলি। শিশুদের ক্ষেত্রেও এ রকম একটি রেঞ্জ রয়ে গেছে। বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী স্বাভাবিক মাত্রার নিচে যখন হিমোগ্লোবিনটা রয়ে যাবে, তখন রক্তস্বল্পতার কথা বলব।
এমন দেখা দিলে, খেয়াল করতে হবে যেসব উপাদান রক্ত তৈরি করে, সেগুলো সে নিয়মিত খাচ্ছে কি না। আয়রন, বি১২, ফলিক এসিড এগুলো প্রচলিত বিষয় হিমোগ্লোবিন তৈরির ক্ষেত্রে। এগুলোর তার খাবারের মধ্যে ঠিকমতো থাকছে কি না দেখতে হবে। হয়তো দেখা যাচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদি রক্ত চলে যাচ্ছে। দেখতে হবে, তার গ্যাসট্রিকের সমস্যা রয়েছে কি না, পেপটিক আলসার রয়েছে কি না, নারীদের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্কদের ঋতুস্রাবের পরিমাণটা বেশি হচ্ছে কি না, দেখতে হয়। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে রক্ত যাচ্ছে। আমাদের ভাবতে হবে কোনো ক্যানসারও রয়েছে কি না। এই কারণগুলো আমাদের প্রথমে বের করতে হবে।