নারীর হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি কখন প্রয়োজন?
হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। সাধারণত মেনোপজের পর এ থেরাপি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫৩৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. শামীমা নার্গিস নীলা।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের গাইনি ও অবস বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : একজন নারীর হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি কেন প্রয়োজন? নিলে উপকার কী? এটি নিলে কোনো জটিলতা হতে পারে কি?
উত্তর : শরীরে যখন হঠাৎ করে হঠাৎ করে হরমোন কমে যায়, ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়, তখন শারীরিক কিছু লক্ষণ চলে আসে, আমরা বলি পোস্ট মেনোপোজাল সিনড্রোম, মায়েরা এসে অভিযোগ করে কান দিয়ে মনে হয় আগুন বের হচ্ছে, গায়ে ঘাম হচ্ছে। এই যে হঠাৎ করে হরমোনটা কমে যায়, এ জন্য শরীরের যে লক্ষণগুলো এগুলো রোগীরা সহ্য করতে পারে না। এই অভিযোগগুলো যখন রোগীরা আমাদের কাছে নিয়ে আসে, তখন আমরা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দিই।
এই চিকিৎসা আমরা দেব। তবে কীভাবে দেব, সেটিই হলো কথা। ধরুন, একজন রোগীর অপারেশন হয়েছে আগে, ইউট্রাস ফেলে দেওয়া হয়েছে। ইউট্রাস, ওভারি ফেলে দিলে এরাও মেনোপজাল। এরাও এ লক্ষণগুলো নিয়ে আসে। এখানে কিন্তু আমরা ইসট্রোজেন দিতে পারছি, কোনো সমস্যা নেই। তাহলে নিয়মিত আমরা এদের ইসট্রোজেন দিয়ে সাপ্লিমেন্টটা দিচ্ছি। তবে যাদের ইউট্রাস রয়েছে। প্রাকৃতিক নিয়মের কারণে মেনোপজ হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে যখন হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দেব, এই ইসট্রোজেনের সঙ্গে প্রোজেসটেরন নামে একটি হরমোন রয়েছে, সেটাও দেব। এটি আমরা চক্রাকারে দেব। তার হয়তো কিছুদিন ঋতুস্রাবও হবে। এরা ফলোআপে থাকবে। এদের ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রোমেট্রিয়াল কারসিনোমা হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।
প্রশ্ন : এই হরমোন দেওয়ার কারণে কি তার কোনো সমস্যা হতে পারে?
উত্তর : যেমন আমরা প্রথমেই বললাম, রক্তক্ষরণ নিয়ে রোগীরা আমাদের কাছে আসতে পারে, এটি একটি বিষয়। অনেক সময় দেখা যায়, এইচআরটি নেওয়ার পর রোগীর হরমোনটা সে রকম সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে রোগীরা আমাদের কাছে আসে। সেই জন্য আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। যেমন লিভারের কার্যক্রম পরীক্ষা করি। ব্রেস্টের একটি ইভল্যুয়েশন করি রোগীদের। ফলোআপে রাখি রোগীকে। দীর্ঘমেয়াদি সময় ধরে আমরা এটি দেব না। যখনই লক্ষণগুলো কমে আসবে, ছয় মাস বা এক বছর পর তখন আমরা একে বন্ধ করে দেব। বন্ধ করে দেখব রোগীর এটি শরীরের সঙ্গে সমন্বয় হয়ে গেছে কি না। অনেক সময় হয়ও তাই। এটিই শরীরের সঙ্গে মিশে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে আমরা এটি চালাব না।