ত্বকের দাগ দূর করার চিকিৎসা কী?

Looks like you've blocked notifications!
ত্বকের দাগ দূর করার চিকিৎসার বিষয়ে আলোচনা করেছেন ডা. মেহরান হোসেন ও ডা. সানজিদা হোসেন। ছবি : এনটিভি

ত্বকে যেকোনো ধরনের দাগই খুব অস্বস্তিকর। শ্বেতী রোগ, মেছতা, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, হরমোনের সমস্যা ইত্যাদি কারণে ত্বকে দাগ হতে পারে। 

ত্বকের দাগ দূর করার চিকিৎসা কী, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৪৭০তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মেহরান হোসেন। বর্তমানে তিনি ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : ত্বকের কালো দাগ দূর করতে কী ধরনের চিকিৎসা বাংলাদেশে রয়েছে?

উত্তর : আমরা প্রথমে হাইপো পিগমেন্টেশনে চলে যাই। শ্বেতী বা ভিটিলিগোর ক্ষেত্রে বলি। একে একটি হেরিডিটারি রোগ বা অটোইমিউন রোগ আমরা বলি। এর কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। তবে আমরা সহায়ক রোগ হিসেবে বা ইমিউনিটি মডিওলটর হিসেবে অনেক ওষুধ ব্যবহার করি। খাওয়ার  জন্য বিভিন্ন ভিটামিন ব্যবহার করি। কৃমির ওষুধ পর্যন্ত ব্যবহার করি। ত্বকে লাগানোর জন্য আমরা কোলটার দেই। আলকাতরা যাকে বলি, কোলটার এর প্রক্রিয়াজাত অবস্থা।

প্রশ্ন : শ্বেতী তো পুরোপুরি ভালো হওয়ার কোনো উপায় নেই। তাই নয় কি?

উত্তর : আসলে এটি প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করতে পারলে অনেক ক্ষেত্রে রোগী অনেকখানি সেরে যায়। তিন বা পাঁচ বছরের আগে যদি আমাদের কাছে আসে বা যদি হমিওপ্যাথি বা অপচিকিৎসা না নেয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রেই এটি থেকে নিরাময় সম্ভব।

শ্বেতী রোগের ক্ষেত্রে আরেকটি ব্যবস্থাপনা আমাদের দেশে আমরা করি। সেটি হলো ফটো থেরাপি। রোগী আসবে, আলোর নিচে হাত রাখবে, অনেক সময় সম্পূর্ণ শরীর ফটো থেরাপি আমরা করে থাকি। এটি খুব ব্যয়বহুল নয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি রয়েছে। বড় বড় স্কিন সেন্টারেও রয়েছে। এটি একদমই ব্যয়বহুল নয়। এটি দীর্ঘদিন নিতে হয়। এ রকম করে নয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত।

এ ছাড়া পোস্ট ইনফ্লামেটরি হাইপার পিগমেন্টেশন যাকে বলি- বিভিন্ন অসুখের কারণে যে দাগ হয়- এগুলো সাধারণত কিছু ওষুধ ব্যবহার করলে দেড় থেকে দুই মাস বা এক মাসের মধ্যে সেরে যায়। পিটিয়াসিস অ্যালবা যেটি, অ্যালার্জি জনিত কারণ, এগুলোতে আমরা ট্র্যাকনিমা জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করে থাকি এবং সঙ্গে অ্যালার্জির ওষুধ দেই। এটি বাচ্চাদের একটু বেশি হয়। আবার যেমন, ছুলি। এগুলোতেও আমরা এ ধরনের ওষুধ ব্যবহার করে থাকি, সঙ্গে অ্যালার্জির ওষুধ দেই। এটি বাচ্চাদের একটু বেশি হয়।

প্রশ্ন : হাইপার পিগমেন্টেশনের সমস্যা কি ওষুধের মাধ্যমে নিরাময় করা সম্ভব ?

উত্তর : হাইপার পিগমেন্টেশনের ক্ষেত্রেও  কারণভেদে চিকিৎসার ভাগ হয়। চিকিৎসা বা ব্যবস্থাপনা খুব বেশি তারতম্য করে। যেমন, মেছতা। সূর্যের আলো থেকে যেটি হয়। এ জাতীয় অসুখ হলে আমরা সাধারণত ডি-পিগমেন্টারি ওষুধ দেই। মেলানিন বেশি তৈরি হচ্ছে। মেলানিন যেন কম তৈরি হয়, সেগুলোর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের ক্রিম, মলম, ওয়েনমেন্ট, লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি। খাবারের ওষুধ দেই। ভিটামিন দেই বা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ভিটামিন দেই।

এ ছাড়া আমরা প্রচলিতভাবে যেটি করি, রোগীকে বলি সানব্লক ব্যবহার করতে। রোদের যে আল্ট্রাভায়োলেট রে রয়েছে, এগুলো থেকে নিজেকে সুরক্ষা দিতে পারলে অনেক কমে যাবে। এতে যদি মেছতা না সারে, আমরা কেমিক্যাল পিলিং ব্যবহার করি। বিভিন্ন ক্যামিক্যাল রয়েছে, কজিক এসিড, গ্লাইকোলিক এসিড, লেকিক এসিড দিয়ে আমরা বিভিন্ন সিটিং দিয়ে পিলিং করে থাকি। দুই বা তিন সপ্তাহ পর দাগ অনেক চলে যায়।

এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে যদি দাগ হয়, তাহলে ব্যবস্থাপনা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সে ক্ষেত্রে আগে কারণটি নির্ণয় করতে হবে। ডায়াবেটিস থাকলে সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, হরমোনের সমস্যা থাকলে সেটি কমাতে হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাপনা করতে হবে।