হাড় ক্ষয় কেন হয়?
হাড়ের ঘনত্ব কমে গেলে হাড় ক্ষয় বা অস্টিওপরোসিস হয়। প্রবীণ বয়সে এ সমস্যাটি বেশি হয়। হাড় ক্ষয়ের কারণ কী?
এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৪৬৪তম পর্বে কথা বলেছেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ সহিদুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের একাডেমিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : হাড় ক্ষয়ের সমস্যা হয় কেন?
উত্তর : প্রথম কথা হলো, এটি হলো ফিজিওলজিক্যাল পদ্ধতি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি হবে। আপনার, আমার সবারই হবে। তবে মেয়েদের একটু বেশি হয়। মেয়েদের ইসট্রোজেন নামের একটি হরমোন থাকে। এই হরমোনটা স্বাভাবিকভাবে হাড়ের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধ করে। আমি যদি আরেকটু গোঁড়ার দিকে যাই, আমাদের শরীরে যে হাড় তৈরি হয়, ২০ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত এর বেশিরভাগ ঘনত্ব হয়। ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত হাড়ের যেমন ক্ষয় হয়, আবার সেই সঙ্গে সঙ্গে রিপ্লেসমেন্ট হয়। এ দুটোর ভারসাম্য থাকে। ৪০ বছরের পর এর ক্ষয় শুরু হয়। কিন্তু নারীদের একটু আগে ভাগে হয়। হাড় ক্ষয় করার জন্য একটি কোষ থাকে, যাকে আমরা বলি অস্টিওক্লাস্ট। আর আরেকটি কোষ থাকে অস্টিওব্লাস্ট। অস্টিওক্লাস্টের কাজ হলো ভাঙা। এই ভাঙা- গড়ার মধ্যে হাড়কে শেপ করে। ইসট্রোজেন আসে ওভারি থেকে। ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ইসট্রোজেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অস্টিওক্লাস্টিং বেড়ে যায়। এতে হাড় ক্ষয় হতে পারে। এটা মেয়েদের ক্ষেত্রে। পুরুষের ক্ষেত্রে আমরা তখন বলি সেনাইল অস্টিওপরোসিস। বয়স বাড়ার কারণে এটা হবেই। এটি স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া। সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে এভাবেই তৈরি হয়ে আসছে।
আরেকটি বিষয় যেটি আমি বলার প্রয়োজন মনে করি, আমাদের ঘনত্ব বাড়তে থাকে ৩০ বছর পর্যন্ত। তাই প্রথম ৩০ বছর পর্যন্ত আমাদের এই হাড়ের ঘনত্ব বাড়িয়ে রাখার জন্য, যতগুলো কাজ করা দরকার, আমাদের সব করতে হবে।
আমরা যেমন আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ভালো করার জন্য টাকা-পয়সা রেখে দেই, আমাদের শরীর ভালোর জন্যও এ বয়স পর্যন্ত আমাদের হাড়ের ঘনত্বকে বৃদ্ধি করে রাখা প্রয়োজন।