থ্যালাসেমিয়া কী, কেন হয়?
থ্যালাসেমিয়া একটি রক্তরোগ। এই রোগের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৪২৬তম পর্বে কথা বলেছেন ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন।
বর্তমানে তিনি বায়োমেডিকেল রিসার্চ ফাউন্ডেশনের কার্যনির্বাহী পরিচালক ও গবেষক এবং আইইউবির সহকারী অধ্যাপক।
প্রশ্ন : থ্যালাসেমিয়া রোগটি কী? এটি হয় কেন?
উত্তর : সহজ কথায় বলতে গেলে থ্যালাসেমিয়া একটি রক্তের রোগ। এটি বংশগত। এটি মা-বাবার কাছ থেকে আসে। এই রোগ হলে রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
বাংলাদেশে এটি অ্যানিমিয়া বলে পরিচিত। তবে অ্যানিমিয়ার সঙ্গে থ্যালাসেমিয়ার পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশে থ্যালাসেমিয়া একটি নীরব মহামারি হিসেবে রয়েছে। এটি অনেকের কাছেই অজানা।
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা বেঁচে থাকে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে ভেঙে পড়ে।
প্রশ্ন : আপনারা কোন কোন বিষয় সামনে রেখে গবেষণা করেছেন?
উত্তর : আমি যেহেতু চিকিৎসক নই, তাই আমার গবেষণার উদ্দেশ্য হলো থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ। থ্যালাসেমিয়া এমন একটি রোগ, যেটি সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। থ্যালাসেমিয়া ১০০ ভাগ প্রতিরোধ করা যায়।
একজন স্বাস্থ্যকর মানুষ, তার মধ্যে জিনের সমস্যা রয়েছে, কিন্তু এতে তার কোনো সমস্যা হয় না। বাহকরা সুস্থ এই জন্য কেউ বুঝতে পারে না সে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। তো, এ রকম দুজন বাহক যদি বিয়ে করে, তাহলে তাদের সন্তানের ২০ ভাগ আশঙ্কা থাকে থ্যালাসেমিয়া হওয়ার।
অনেকে বলেন, চারটি বাচ্চা হলে একটি বাচ্চার থ্যালাসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। আসলে এটি ভুল ধারণা। আমরা একটি কাজ করছি, দেখা যাচ্ছে, প্রায় ২০ ভাগ পরিবারে দুজন করে বাচ্চার থ্যালাসেমিয়া। দুটো বাচ্চা দুজনেরই থ্যালাসেমিয়া। অনেক পরিবারে তিনটি বাচ্চা, তিনজনেরই থ্যালাসেমিয়া পাওয়া গেছে।
যদি একজন বাহক হয়, আরেকজন স্বাভাবিক হয়, তাহলে কিন্তু বিয়ে হতে কোনো সমস্যা নেই।
প্রশ্ন : দুজন বাহক যদি হয়, তাহলে তাদের সন্তানদের ক্ষেত্রে বাহক হওয়ার আশঙ্কা কতজনের? এবং থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কতজনের?
আর দুজন বাহক না হয়ে একজন সরাসরি যদি থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়, যার লক্ষণ রয়েছে, তাহলে সন্তানের হওয়ার আশঙ্কা কেমন?
উত্তর : প্রথম হলো থ্যালাসেমিয়া রোগী, এর মানে তার জিনগত সমস্যাটা প্রকোট। এ জন্য লক্ষণ দেখা গিয়েছে। ওই রোগী যদি একজন স্বাভাবিক মানুষকে বিয়ে করে, তাহলে সন্তানের থ্যালাসেমিয়া হবে না।