বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলে স্বতন্ত্র গবেষণাগার

Looks like you've blocked notifications!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) শুরু হয়েছে স্বতন্ত্র গবেষণাগার। চিকিৎসাবিজ্ঞানে গবেষণা করতে ইচ্ছুক এমন সবাই এখানে গবেষণা করতে পারবেন। গবেষণা দলগতভাবে বা একাও করা যাবে।

২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড বায়োমেডিকেল রিসার্চ’ নামে এই গবেষণাগারটির নীতিমালা অনুমোদিত হয়।

গবেষণাগার প্রসঙ্গে এর প্রধান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষক ডা. খোরশেদ আলম বলেন, ‘গবেষণাগারটি এখনো অনেক প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। হ্যাকেপ-এর প্রজেক্ট ছিল এটি। ইউনিভার্সিটির গ্র্যান্ড কমিশনের প্রজেক্ট ২০১৪ সালে শুরু হয়। শেষ হয় ২০১৭ সালে। পরে একে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্টার করার জন্য প্রজেক্ট হিসেবে পাঠাই। ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় রিসার্চ সেন্টার হিসেবে এই নীতিমালা অনুমোদন হয়।’

গবেষণাগারটি তৈরির উদ্দেশ্য সম্পর্কে ডা. খোরশেদ আলম বলেন, ‘আসলে কাউকে না কাউকে তো গবেষণাগার করার চিন্তা করতে হবে। সবার পক্ষে তো গবেষণার জন্য আলাদা সেন্টার করা সম্ভব নয়। এই সেন্টারের উদ্দেশ্য হলো সব ধরনের গবেষণার জন্য সাহায্য করা।’

কী ধরনের গবেষণা এখানে করা যাবে—জানতে চাইলে ডা. খোরশেদ বলেন, ‘আমরা বর্তমানে গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত রোগ, স্টেম সেলথেরাপি, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, প্রি-একলামসিয়ার বিষয়ে কাজ করছি। তবে আরো অনেক বিষয় নিয়ে আমাদের কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে। কেউ গবেষণা প্রজেক্ট নিয়ে এলে আমি সে প্রজেক্ট তৈরি করতে সাহায্য করব। যারা গবেষণা করতে চায়, একাও করতে পারে, আবার দলগতভাবেও করতে পারে। আবার কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েও কাজ করতে পারে। আমাদের এখানে বর্তমানে প্রায় ১০/১২ জন ছাত্র-শিক্ষক গবেষণার জন্য কাজ করছেন।’

গবেষণায় আগ্রহীদের জন্য অত্যাধুনিক সুবিধা আছে জানিয়ে ডা. খোরশেদ বলেন, ‘এখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিভিন্ন যন্ত্র রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের পিসিআর, প্রোরো মিটার, প্রোটিন ডিএনএ, স্যাম্পল সঠিকভাবে সংরক্ষণের জন্য মাইনাস ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ফ্রিজ ইত্যাদি রয়েছে। গবেষণায় সাহায্য হয়, এমন আরো অত্যাধুনিক যন্ত্র আমরা দ্রুতই সংগ্রহ করব বলে আশা করছি।’

বর্তমানে গবেষণাগারটিতে ওরাল ক্যানসারের সঙ্গে জিনের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করছেন অধ্যাপক ডা. কাজী বিল্লুর রহমান। তিনি জানান, এ ধরনের গবেষণাগার থাকাতে তাঁর কাজে অনেক সুবিধা হচ্ছে। ডা. বিল্লুর বলেন, ‘আমাদের এই গবেষণাগারটি নিয়ে অনেক আশা। এ রকম একটি স্বতন্ত্র গবেষণাগার হয়েছে এখানে এটি ভালো দিক। আমাদের এ রকম ল্যাব আগে কখনো ছিল না। এটি যদি ভালোভাবে ধরে রাখা যায়, তাহলে অনেক কাজ করার সুযোগ পাওয়া যাবে। আমি মূলত ওরাল ক্যানসারের ওপর জিনের প্রভাব রয়েছে কি না, সেটি বের করার চেষ্টা করছি। আমার সঙ্গে আরো তিনজন কাজ করছেন। এই গবেষণাগারটি নিয়ে আমরা অনেক আশাবাদী।’

বাংলাদেশে গবেষণার অবস্থা নিয়ে গবেষক ডা. খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমাদের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি গবেষণা অত্যাবশ্যকীয়। আমাদের দেশে গবেষণার অংশটা পিছিয়ে রয়েছে। রোগী দেখতেই ব্যস্ত থাকতে হয়। বাইরের দেশগুলোতে গবেষণার জন্য সময় দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান এমপি, এমএস কোর্সের ছাত্রদের গবেষণার জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ণয় করা নেই। এতে তারা বেশিরভাগ সময় ক্লিনিকের কাজে ব্যস্ত থাকে। তারা গবেষণার জন্য সময় দিতে পারে না। তবে ডিগ্রির পূর্বশর্ত হলো গবেষণা। কোর্স কারিকুলামে গবেষণার জন্য সময় দেওয়া প্রয়োজন।’