পুরুষের চেয়ে নারীর বেশি ঘুম প্রয়োজন হয়। মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্যই এমনটি দেখা যায়। আর পুরুষের চেয়ে নারীদের মধ্যেই অপর্যাপ্ত ঘুমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয় বেশি। সাম্প্রতিক এক গবেষণার ভিত্তিতে এই দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক। 

নারী ও পুরুষের মধ্যে ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় সময় এবং ঘুমের কারণে শরীরে প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের ডিউক ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। এতে নেতৃত্ব দেন মানসিক স্বাস্থ্য ও ঘুমবিষয়ক বিশেষজ্ঞ বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষক মাইকেল ব্রেয়াস। এই গবেষণার তথ্য নারীস্বাস্থ্য বিশেষত হৃদরোগ, বিষণ্ণতা, মানসিক রোগের ক্ষেত্রে করণীয় ঠিক করতে চিকিৎসকদের সহায়ক হবে। 

গবেষক মাইকেল ব্রেয়াস বলেন, অপর্যাপ্ত ঘুমে নারীদের মধ্যে বেশি প্রতিক্রিয়া বেশি। খুব সকালে নারীদের মধ্যে বিষণ্ণতা, ক্ষোভ বা রাগ  বেশি দেখা যায়। 

গবেষকরা বলেন, কার কতটুকু ঘুম প্রয়োজন তা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল, যার কিছু জৈবিক। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, মস্তিষ্কে শক্তি ব্যয়ের ওপর কতটুকু ঘুমাতে হবে তা নির্ভর করে। আর নারীদের মধ্যে মস্তিষ্কে শক্তি বেশি ব্যয় হয়।  

যুক্তরাষ্ট্রের স্লিপ রিসার্চ সেন্টারের গবেষক জিম হর্নের মতে, ঘুমের মাধ্যমে মস্তিষ্ক পুনরুজ্জীবিত হয়। গভীরভাবে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় মানুষের মস্তিষ্কের চিন্তা, স্মৃতি, ভাষা ও অন্যান্য অংশ কাজ থেকে মুক্ত হয়ে উজ্জীবিত হয়। মস্তিষ্কের ওপর চাপ পড়লে স্বাভাবিকভাবেই এটি পুনরুজ্জীবিত হতে বেশি সময় নেয়। নারীদের মধ্যে একই সঙ্গে কয়েকটি কাজ করার প্রবণতা দেখা যায়। এভাবে কাজ করায় মস্তিষ্কের ওপর বেশি চাপ পড়ে। 

গবেষকদের মতে, শুধু নারীদের ক্ষেত্রেই নয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার চাকরি যাঁরা করেন বা যাঁদের কাজে অনেক চিন্তা করতে হয় এমন পুরুষদের ক্ষেত্রেও ঘুম বেশি প্রয়োজন হয়। 

মেডিকেলসিটির মতে, গবেষক মাইকেল ব্রেয়াসের নেতৃত্বে ডিউক ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বেশ কয়েকটি গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে গবেষণা করেন। এর আগে কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা ঘুম কম হওয়ার সঙ্গে চামড়ার বয়স বৃদ্ধি, হৃদরোগ, স্ট্রোক ও মানসিক সমস্যায় পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। গবেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিটি পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির জন্য সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। তবে দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষই এই সময়ের কম ঘুমায়।