হার্টে যেসব সমস্যা হয়

Looks like you've blocked notifications!

শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হার্ট। হার্টে বিভিন্ন সমস্যা হয়। হার্টের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১৮৯তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মোহাম্মদ আরমানে ওয়াদুদ।

ডা. মোহাম্মদ আরমানে ওয়াদুদ বর্তমানে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : হার্টের কী কী সমস্যা রয়েছে?

উত্তর : হার্টের সমস্যাকে আমরা সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করি। একটি হলো জন্মগত হৃদরোগ। আরেকটি হলো, অ্যাকোয়ার্ড ডিজিজ। জন্মের পরে পরবর্তীকালে যেটি হয়। সাধারণত জন্মগত হার্টের সমস্যার জন্য আলাদা চিকিৎসক থাকে। এদের বলা হয় শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।  এদের যারা অস্ত্রোপচার করে তাদের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ সার্জন বলি। আরেকটি দল যাদের আমরা ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট বলি। প্রবীণ মানুষের হৃদরোগ নিয়ে যারা কাজ করে। সাধারণত আমরা ইন্টারভেনশন কার্ডিওলজিস্ট বলি। কিছু নন ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টও রয়েছে, যারা ক্লিনিক্যাল কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে পরিচিত। আর প্রাপ্ত বয়স্কদের কার্ডিয়াক সার্জারি, বয়স্ক মানুষের যে হার্টের সমস্যার সমাধান করে, তারা হচ্ছে, অ্যাডাল্ট কার্ডিওলজিস্ট। আমি অ্যাডাল্ট বা প্রাপ্ত বয়স্কদের হৃদরোগের সার্জন।

প্রশ্ন : কোন রোগগুলোকে হৃদরোগ বলা হয়?

উত্তর : জন্মগত হৃদরোগ আসলে বিস্তারিত আলোচনার জন্য আলাদা একটি বিষয়।  প্রাপ্ত বয়স্কদের হৃদরোগগুলোকে আমরা কয়েকটি ভাগে ভাগ করি। একটি হলো রক্তনালির সমস্যা বা করনারি হার্ট ডিজিজ। হার্টের নিজস্ব যে রক্তনালি রয়েছে, সেগুলোর জন্য যে সমস্যা হয়, হার্ট অ্যাটাক যে কারণে হয়, সেটি হলো করনারি হার্ট ডিজিজ। এনজিওগ্রামের মাধ্যমে আমরা বুঝি যে হার্টের রক্তনালিতে ব্লক রয়েছে কি না। আমরা করনারি হার্ট ডিজিজের সঙ্গে বেশি পরিচিত। দ্বিতীয় আরেক ধরনের রোগ হলো ভাল্ভিউলার হার্ট ডিজিজ। হার্টের মধ্যে চারটি ভাল্ভ রয়েছে। এর মধ্যে দুটো বা তিনটি ভাল্ভে সাধারণত বেশি সমস্যা হয়।

আর আরেক ধরনের সমস্যা, যাকে আমরা বলি অ্যায়োটিক ডিজিজ। হার্টের যে সবচেয়ে বড় রক্তনালি, যার মাধ্যমে সারা শরীরে সাধারণত রক্ত সঞ্চালন হয়ে থাকে, সেটাতেও অনেক ধরনের অসুখ হয়, যেগুলো সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্ক কার্ডিয়াক সার্জন যারা, তারা সমাধান করে থাকে।

প্রশ্ন : হার্টের এই সমস্যাগুলো নিশ্চিত করার পর কী ধরনের চিকিৎসা দেবেন, সেটি কীভাবে চিহ্নিত করে থাকেন?

উত্তর : প্রথমে আসি করনারি হার্ট ডিজিজে বা হার্টের নিজস্ব রক্তনালির যে সমস্যা তাকে করনারি হার্ট ডিজিজ বলে। করনারি হার্ট ডিজিজে সাধারণত বুকে চাপ চাপ লাগে, অজ্ঞান হয়ে যায়, হঠাৎ করে মারা যায়, এ ধরনের সমস্যা নিয়ে সাধারণত বেশি আসে। কিছু দূর চলাফেরা করলেই হাঁপিয়ে ওঠে বা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে গেলেই দেখা যায় হাঁপিয়ে যাচ্ছে, পারছে না, বুকে ব্যথা করছে, সঙ্গে ঘাম হচ্ছে বা শ্বাসকষ্ট হচ্ছে সাধারণত। বুকের ব্যথার সঙ্গে সাধারণত করনারি হার্ট ডিজিজে শ্বাসকষ্টটা খুব প্রচলিত। ঘেমে যায়। মনে হবে পাথর বা হাতি বসে রয়েছে বুকের ওপর।

এই ধরনের সমস্যা দেখলে নন ইন্টারইনভেসিভ পরীক্ষা রয়েছে, সেগুলোর মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করি প্রথমে রোগ নির্ণয় করার। ইসিজি, ইকো কার্ডিওগ্রাম, ট্রেডমিল বা এক্সারসাইস টলারেন্স টেস্ট, এ ধরনের কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা রয়েছে, সেগুলোর মাধ্যমে আমরা প্রথমে স্ক্রিন করার চেষ্টা করি যে এটি কি আসলেই হার্টের অসুখ, না কি অন্য কোনো বিষয় থেকে মাংসপেশি বা হাড়ের ব্যথা হচ্ছে কি না। এরপর পরীক্ষা করে যখন নিশ্চিত হই যে কার্ডিয়াক পেইন, রক্তনালির ব্লকটা কতটুকু খারাপ সেটি দেখতে। দুটো জিনিস। একটি হলো সমাধান করা সম্ভব। আরেকটি হলো সমাধান করা ভালো। হার্টের রক্তনালি হয়তো ব্লক, এটি কীভাবে সমাধান করা যাবে সেটি ভাবতে হবে। এটি কি কেবল ওষুধ খেয়ে সম্ভব, নাকি রিং পরিয়ে সম্ভব, না কি শুধু সার্জারি করিয়ে সম্ভব- এই তিনটির মধ্যে কোনটি সমাধানের জন্য ভালো। আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি নিষ্কৃতি দেবে, ভালো রাখবে কোন সমাধানটি, সেটি দেখতে হবে।