নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন? জেনে নিন ঘরোয়া পদ্ধতি
হালে ঘরে-ঘরে নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা দেখা যাচ্ছে, যা শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। নিম্ন রক্তচাপ বা লো ব্লাড প্রেসার তখনই হয়, যখন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত ঠিকমতো পৌঁছাতে পারে না। পাশাপাশি দুশ্চিন্তা, ভয় ও স্নায়ুর দুর্বলতা থেকে এই সমস্যা দেখা দেয়। আর রক্ত শরীরে ঠিকমতো সরবরাহ না হওয়ার ফলে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেইলিউরের মতো গুরুতর অসুখের সম্মুখীন হতে হয় মানুষকে।
স্বাস্থ্য ও জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাধারণত একজন সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ হওয়া উচিত ১২০/৮০। যদি কোনো ব্যক্তির রক্তচাপ ৯০/৬০ বা তার কম থাকে, তখন লো ব্লাড প্রেসার হিসেবে গণ্য করা হয়। রক্ত পরীক্ষা, রেডিওলজিক স্টাডিজ ও কার্ডিয়াক টেস্টের মাধ্যমে লো প্রেসারের সমস্যাকে নির্ধারণ করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই আপনি এ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ওষুধপত্র খাওয়া ছাড়াও নিয়মমাফিক জীবনযাত্রা বজায় রাখা, সুষম খাবার গ্রহণ ও কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে অনায়াসে এই সমস্যাকে দূর করতে সক্ষম হবেন।
চলুন, জেনে নেওয়া যাক লো ব্লাড প্রেসার থেকে মুক্তি পেতে কী কী ঘরোয়া উপায়কে কাজে লাগাবেন—
লো ব্লাড প্রেসারের লক্ষণ
মাথা ঘোরানো, শ্বাস প্রশ্বাসের কষ্ট, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, অবসাদ, বমি-বমি ভাব, ঘুম-ঘুম ভাব, কাজকর্মে অনীহা।
যে ঘরোয়া উপায়গুলো মেনে চলবেন :
নুনপানি পান করুন
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই এক চা-চামচ পরিমাণ নুন থাকা প্রয়োজন। এই লবণ শরীরের কার্যকারিতাকে ঠিক রাখতে এবং হাইপোটেনশন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। সুতরাং আপনি যখনই লো ব্লাড প্রেসারের লক্ষণগুলোর সম্মুখীন হবেন, তখন একগ্লাস পানিতে লবণ মিশিয়ে পান করুন। এটি আপনার রক্তচাপকে স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করবে।
তুলসী পাতা
রোজ সকালে ৫-৬টি করে তুলসী পাতা চেবান বা এক টেবিল চামচ তুলসী পাতার রস খান। তুলসী পাতায় থাকে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন সি, যা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এতে ইউজেনল নামে একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
কফি
লো ব্লাড প্রেসারের সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে পান করুন এক কাপ কফি। এটি আপনার রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করবে। তবে কফি অল্প সময়ের জন্যই আপনার রক্তচাপকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করে।
পানি পান
প্রতিদিন তিন থেকে চার লিটার পানি পান করুন। এটি দেহের টক্সিনকে বের করে শারীরিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে, পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সহায়তা করে।
লাল কাঁচা বাদাম
লো ব্লাড প্রেসার ঠিক রাখতে সারারাত ৮-১০টি বাদাম পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিন। সকালে খোসা ছাড়িয়ে তা আখের গুড়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে নিন। বাদামে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড নিম্ন রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
শজনে শাক
শজনে শাকে থাকে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা উচ্চ রক্তচাপ কমানোর পাশাপাশি নিম্ন রক্তচাপেও সহায়ক। তাই সপ্তাহে দুদিন করে দুপুরের খাবারে শজনে শাক রাখুন।
বিটের রস
বিটে থাকে উচ্চমাত্রার নাইট্রেট, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যাঁরা নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন, তাঁরা দিনে অন্তত দুই গ্লাস বিটের রস পান করুন। এটি রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে খুবই কার্যকর।