দেশে বর্তমানে ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যানসাররোগী রয়েছে
বৈশ্বিক পরিবর্তন, জীবনযাপন পদ্ধতিসহ বিভিন্ন কারণে সারা বিশ্বে ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। প্রতি বছর ৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন মানুষ ক্যানসারে মৃত্যুবরণ করছে। বাংলাদেশে বর্তমানে ১৩ থেকে ১৫ লাখ ক্যানসার রোগী আছে এবং বছরে প্রায় দুই লাখ মানুষের ক্যানসার ধরা পড়ছে। এমনই তথ্য দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ক্যান্সার প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন চিকিৎসকরা।
বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষে দিগন্ত মেমোরিয়াল ক্যানসার ফাউন্ডেশন আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিশিষ্ট সার্জিক্যাল ইউরোঅনকোলজিস্ট, ইনসাফ বারাকাহ কিডনি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম ফখরুল ইসলাম, ফাউন্ডেশনের পরিচালক অধাপক ডা. মো. নওফের ইসলাম, ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ এস কিউ এম সাদেক, ফরিদা ইয়াসমিন কনা, মো. আলতাফ হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘ক্যানসারকে মৃত্যুর দ্বিতীয় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রায় ৭০ ভাগ ক্যানসার নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। সারা বিশ্বে বৎসরে প্রায় ১ দশমিক ১৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্যানসারের জন্য ব্যয় হচ্ছে। এই সব ক্যানসারের এক তৃতীয়াংশ প্রতিরোধযোগ্য। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যম ৩ দশমিক ৭ মিলিয়ন মানুষের ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দিগন্ত মেমোরিয়াল ক্যানসার ফাউন্ডেশনের পরিচালক অধাপক নওফের ইসলাম বলেন, ‘সামাজিক দায় থেকে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছিলাম দিগন্ত মেমোরিয়াল ক্যানসার ফাউন্ডেশন। যেসব রোগী ঢাকায় এসে টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারে না, তাদের আমরা নামমাত্র মূল্যে রোগী ও রোগীর স্বজনসহ থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকি। রেডিও বা ক্যামোথেরাপি দেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে আনা নেওয়ার ব্যবস্থা করি। কোনো রোগী ওই টাকা দিতে না পারে তবে আমরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রোগীকে সার্ভিস দিয়ে থাকি।’
অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম মতবিনিময় সভায় ক্যানসারের ঝুঁকি প্রসঙ্গে তামাককে বেশি দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘কিছু ক্যানসার বংশগতভাবে হয়। যেমন- স্তন ক্যান্সার। আর শতকরা ৯০ ভাগ ক্যানসারের জন্য দায়ী আমাদের দেশের পরিবেশ। পরিবেশের মধ্যে ভাগ করে বললে বলা যায় কিছু রাসায়নিক পদার্থের কথা। বিশেষ করে তামাক থেকে অর্ধেকের বেশি ক্যানসার হয়। সেটা ধোয়াযুক্ত বা ধোয়ামুক্ত যে ধরনের তামাকেই হোক না কেন। ফুসফুসের ক্যানসারের ৮৫ থেকে ৯০ ভাগই তামাক তথা ধূমপানের কারণে। তাই সবার আগে তামাকের ঝুঁকিটা আমাদের হ্রাস করতে হবে।’