‘গরুর দুধ খেলে শিশুর রক্তস্বল্পতা হতে পারে’
শিশু থেকে প্রবীণ, অনেকেই রক্তস্বল্পতায় ভোগে। দেহে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে, একে রক্তস্বল্পতা বলে। শিশুর রক্তস্বল্পতা হওয়ার কারণ কী, এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. কমল কলি হোসেন। বর্তমানে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার ইনল্যান্ড এমপায়ারে প্রাথমিক চিকিৎসা বিভাগে প্র্যাকটিস করেন। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৬৫৯তম পর্বে সাক্ষাৎকারটি প্রচার করা হয়।
প্রশ্ন : শৈশবকালীন রক্তস্বল্পতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : রক্তস্বল্পতা আসলে শৈশব থেকেই শুরু হয়। আবার বড় বয়সেও হয়। তবে রক্তস্বল্পতা কেন হচ্ছে? আমাদের দেহে একটি উপাদান রয়েছে, যেটি প্রোটিন—একে হিমোগ্লোবিন বলে। এটি অক্সিজেন বহন করে। অক্সিজেন বহনের ক্ষমতা যখন কমে যায়, সেই হিমোগ্লোবিন যখন কমে যায়, তখন একে রক্তস্বল্পতা বলে। তবে শৈশবে এটি বেশি হয়। যারা জন্মের সময় আড়াই কেজির কম ওজন নিয়ে জন্মায়, তাদের হতে পারে।
আবার একটু বড় হওয়ার পর অনেকের রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। এটি আসলে গরুর দুধ থেকে আসে। অনেকে ভাবেন, গরুর দুধ শিশুকে খাওয়ালে ভালো। তবে গরুর দুধ মাইক্রোস্কোপিক হিমাচুরিয়া করে। এতে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। এ জন্য গরুর দুধ সীমিত করতে হবে। অন্যান্য খাবার দিতে হবে। ছয় মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়াবে। ছয়মাস পর সঙ্গে বাড়তি খাবার যুক্ত হবে। তবে প্রায়ই দেখা যায়, গরুর দুধ খাওয়ানো হচ্ছে।
আসলে অনেক মা-ই তো কাজ করেন। কাজ করতে গেলে অনেক সময় বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন না। অনেকে আবার দেখা যায়, দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতিও জানেন না।
আবার দেখা যায়, যখন বড় হচ্ছে, তখন পুষ্টিও ঠিক থাকে না। দেখা যায়, প্রোটিন খাচ্ছে না, আয়রন খাচ্ছে না। এ থেকেও রক্তস্বল্পতা হতে পারে। এ ছাড়া আরেকটি হলো, দুর্ঘটনাজনিত রক্তস্বল্পতা। দুর্ঘটনায় পড়লে রক্তস্বল্পতা হতে পারে।
আরেকটি হলো, মেয়েদের ঋতুস্রাব। এর সম্ভাব্য বয়স হলো, ১৩। কিন্তু নয় বা ১০ বছরে অনেকের হতে দেখা যায়। এই সময় অনেক রক্তপাত হলেও দেখা যায়, বাচ্চাদের রক্তস্বল্পতা হচ্ছে। পেটে কৃমি থেকেও অনেক সময় রক্তস্বল্পতা হয়। যারা খালি পায়ে হাঁটে, তাদের হতে পারে। এ ছাড়া জিনগত কারণেও রক্তস্বল্পতা হতে পারে। থেলাসেমিয়া থেকে হতে পারে।