কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কী, করণীয়
হার্টের জটিল রোগ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। রোগটি কী এবং এটি হলে করণীয় কী, এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মো. ইলিয়াস আলী।
বর্তমানে তিনি বিআরবি হসপিটালে কার্ডিওলজি বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক হিসেবে কর্মরত। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৬০০তম পর্বে সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হয়।
প্রশ্ন : কার্ডিয়াক অ্যারেস্টকে সাধারণ ভাষায় কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
উত্তর : হৃৎপিণ্ডের কাজ হলো, দূষিত রক্তকে পাম্প করে, ফুসফুসে নিয়ে পরিশোধন করা। আর হার্টের বাঁ দিকে লেফ্ট ভেন্টিকুলারে আবার পাম্প করে ছড়ানো। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বলতে আমরা বুঝি, যখন এই কাজটা বন্ধ হয়ে যায়। যখন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হবে, তখন রোগীটা অজ্ঞান হয়ে যাবে। কিন্তু অজ্ঞানের সঙ্গে যদি আমি দেখি রোগীর পালস পাচ্ছে না, সেইসঙ্গে রোগী শ্বাসও নিচ্ছে না, এ অবস্থায় আর কোনো উপায় থাকে না। একে আমরা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বলি।
কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের বেলায় রোগীর কাছে কোনো ইতিহাস পাওয়া যাবে না। সে তো অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। তাঁর কাছে গিয়ে আপনি হয়তো চিৎকার করলেন, তবে সে কোনো জবাব দিল না। একজন মানুষ মরে গেলে যে চেহারা হয়, সে চেহারা হতে হবে। সে জন্য ব্লাডপ্রেশার তো সবাই দেখতে পায় না। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট যেটি বলছি, বাইরে শতকরা ৭৫ ভাগ হয়। হসপিটালের ভেতরে হয় কেবল ২০ ভাগ। তখন তার আত্মীয়স্বজন বা বাইরের মানুষ যারা থাকে, তাদের সংখ্যা বেশি পাওয়া যায়। তার জিহ্বা টেনে দেখলে দেখবেন একদম ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। তারপর যদি নাক দিয়ে কেউ হাত দিয়ে দেখে, কোনো সময়ক্ষেপণ না করে আমরা বলি সিপিআর দেওয়া।
রোগীকে শুইয়ে দিতে হবে, এরপর পিঠের নিচে কোনো শক্ত জিনিস দেবে, যদি বিছানা থাকে, বিছানায়। না হলে মাটিতে শুইয়ে দিবে। বুকের নিচের অংশের বাম দিকে চাপ দেবে। প্রতি মিনিটে ১০০ বার করে। চাপতে গিয়ে উনি যদি একা থাকে, সেকেন্ড অ্যাটেনডেন্ট না থাকে, মাউথ টু মাউথ ব্রেদিং করতে হবে।
মাউথ টু মাউথ ব্রেদিং করতে গেলে মুখের মধ্যে কোনো খাবার রয়েছে কি না, বমি রয়েছে কি না, দেখে নিতে হবে। উনার কাছে রুমাল থাকুক, জামা-কাপড় থাকুক, এগুলো দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। চুপচাপ না থেকে আশপাশের মানুষের তার জন্য সাহায্যের জন্য চিকিৎসার দিতে হবে। এখন এ অবস্থায় কতক্ষণ তারা থাকবে? যদি বুকে চাপ দিতে একজনের কষ্ট হয়, তাহলে অন্যজনকে দেখিয়ে দেবে। এটা কার্ডিয়াক ম্যাসাজ। এটি করতে করতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, তাকে ধারের কাছের হাসপাতালে নিতে হবে। সেটা কার্ডিয়াক হোক, আর নন-কার্ডিয়াক হোক। দেখা গেছে যত তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায়, তার ফলাফলটা ভালো হয়।
প্রশ্ন : সেই রোগীটিকে তখন আপনারা ব্যবস্থাপনা করেন কীভাবে?
উত্তর : রোগী আসার পরে প্রথমে রোগী নিয়ে সিপিআর পর্যন্ত রাখা যাবে না। সিপিআর নিয়মিত করবে। এর সঙ্গে ইসিজি মনিটরে দিলে দেখা যাবে, কী আসছে। এর পর ইনটুইবিশন দিতে হবে। ইনটুইবিশন কথার অর্থ হলো, ল্যারেঙ্গোস্কোপ দিয়ে শ্বাসনালিতে নল ঢুকিয়ে দেওয়া। দেওয়ার পর অক্সিজেন দিতে হবে। আরো কিছু পদ্ধতি পার করে শক দিতে হবে।