টিভি নাটকের ‘মান’ নিয়ে ক্ষোভ লাকী ইনামের
লাকী ইনাম। ‘ষড়ৈশ্বর্য’খ্যাত লাকী ইনাম গুণী শিল্পী, নাট্যকার, নির্দেশক, সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী ও নাট্যশিক্ষক হিসেবেও ব্যাপক জনপ্রিয়।
মঞ্চে তো বটেই, টিভি নাটকেও লাকী ইনাম ছিলেন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’-এর মতো বিপুল জনপ্রিয় নাটকে তাঁর অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়। ওই নাটকে তাঁর চরিত্র ও সংলাপ আজো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ‘বহুব্রীহি’ নাটকে ‘মিস এষা’ ও ‘অয়োময়’ নাটকে ‘মির্জাবাড়ির বড় বউ’ চরিত্রে তাঁর অভিনয় আজো মানুষ মনে রেখেছে। বিশেষ করে ইউটিউবের কল্যাণে জনপ্রিয় নাটকগুলো এখনকার প্রজন্মও দেখে। লাকী ইনাম নিজেই জানালেন ওই দুই চরিত্রে অভিনয় করে তাঁর ভালো লেগেছে।
পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশের মূলধারার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নিজেকে জড়িয়ে রাখা লাকী ইনাম সাম্প্রতিক টিভি নাটক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এনটিভি অনলাইনকে তিনি বলেছেন, ‘টেলিভিশন নাটকে ইদানীং ভাষাকে বিকৃত করে ফেলা হচ্ছে। যে ভাষার জন্য ১৯৫২ সালে তরুণ-যুবকেরা রক্ত দিয়েছে, সেই ভাষাকে বিকৃত করা ভীষণ দুঃখজনক। টেলিভিশন নাটকের ক্ষেত্রে আমরা কিছু নির্দিষ্ট আঞ্চলিক ভাষায় আটকে গিয়েছি, যা কাম্য নয়। যাঁরা এসব নাটকে অভিনয় করছেন, তাঁরাও জানেন না যে কোন কোন অঞ্চলের ভাষা মিশ্রণ করে তাঁরা সংলাপ দিচ্ছেন।’
একুশে পদক পাওয়া খ্যাতিমান এ নাট্যাভিনেত্রী বলেন, ‘নাটকে একজন গ্রামের ছেলে বা মেয়ের পোশাক, কথাবার্তা, সংলাপ কীভাবে শহরের লোকেদের মতো হচ্ছে! আমার মনে হয়, এই জায়গাটায় আরো অনেক বেশি যত্নশীল হতে হবে।’
টেলিভিশন নাটকের এখনকার গল্পগুলো ‘ভালো নয়’ বলেও মনে করেন লাকী ইনাম। বলেন, ‘আগে একটি পাণ্ডুলিপি পাওয়ার পরে মনে হতো—বাহ! কত সুন্দর কাহিনী! কিন্তু এখন সেই জায়গাটি থেকে আমরা সরে এসেছি। এখনকার গল্পগুলো তাই মানুষ আর মনে রাখে না। তাহলে অভিনয়শিল্পীরা কীভাবে জনপ্রিয় হবেন? এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’
লাকীর পরামর্শ, ‘নাট্যকারদের আরো ভালো নাটক লিখতে হবে। নির্দেশকদেরও তাঁদের দায়িত্ব আরো যত্নের সঙ্গে পালন করতে হবে।’
বেতার, টেলিভিশন, থিয়েটার—তিন অঙ্গনেই লাকী ইনামের পথচলা শুরু ১৯৭২ সালে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ছিল এই গুণী অভিনেত্রীর ৬৮তম জন্মদিন।