মাঝখানে শুধু একদিন বাকি। তার পরই ২৮ অক্টোবর শুরু হবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নাট্যকলা বিভাগের আয়োজনে আট দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব-২০১৫।

এরই মধ্যে নাট্যকলা বিভাগের প্রযোজনা মঞ্চনাটক ‘টিনের তলোয়ার’-এর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে এই নাটক মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠবে এই উৎসবের। চলবে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত।

রাবির নাট্যকলা বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, নাটকের কলাকুশলীরা মহড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে এরই মধ্যে তাঁরা প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে ফেলেছেন বলে জানান। প্রস্তুতি সম্পর্কে কথা হয় নাটকের নির্দেশক ড. মীর মেহবুব আলম নাহিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে নাটকের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’
এ সময় ড. মীর মেহবুব আলম আরো বলেন, “‘টিনের তলোয়ার’-এর পাণ্ডুলিপি বেশ জটিল, যার নির্দেশনা দিতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। বাংলা নাটকের ইতিহাস এ নাটকের কাহিনীর মধ্যে আছে। ইতিহাসের আলোকে বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নাটকটি নির্দেশনা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। জানি না, কতটুকু সফল হব। নাটকটি দর্শকের কাছে ভালো লাগলেই নিজেকে সার্থক মনে করব। এখন এর অপক্ষোয় আছি।”
 
সমাজ যাঁদের দিয়েছে অপমান ও লাঞ্ছনা, ওই মানুষগুলোই নাটক করেছেন নিরলসভাবে। কখনো-সখনো যাঁরা মুখোশধারী হিসেবে নাটকের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন, তাঁদেরও মুখোশ উন্মোচন করেছেন। এই মানুষগুলো পরাধীন জাতির হৃদয়-বেদনাকে দিয়েছেন বিদ্রোহ মূর্তি। আর এমন চিত্রই উঠে আসবে ‘টিনের তলোয়ার’-এ।

‘টিনের তলোয়ার’ নাটকটি রচনা করেছেন নাট্যকার উৎপল দত্ত। এতে অভিনয় করছে বিভাগের শিক্ষার্থী রেদওয়ান দৃষ্টি, শাহাদাৎ, কাঞ্চন, তপু সিংহ, আরাধনা, সাবিকুন নাহার, খাইরুল, সাদ্দাম, যাদব, স্বপ্না বাইন, ইমরুল আসাদ, তারকনাথ, অরিন্দম অর্ঘ, জিৎ, নাহিল, মুহিন্দ্রনাথ, সোহেল, অমিত রায়, রুবেল, লিজু।
তাঁদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন ও সাবিকুন নাহার বলেন, ‘এত বড় আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসবে অভিনয় করব, ভেবেই ভালো লাগছে। এই ভালো লাগাটা আরো বেড়ে যাবে যদি দর্শক নাটকটাকে গ্রহণ করে। তবে আমরা আশাবাদী, নাটকটি দর্শকের কাছে ভালো লাগবে।’

নাটকটির পোশাক পরিকল্পনায় থাকছেন সুমনা সরকার, আলোক প্রক্ষেপণে সাইফ মণ্ডল, আবহ সংগীতে হীরক মুশফিক, সার্বিক সহযোগিতায় শাম্মী সেতু, সুমন্ত স্বর ও মৌটুসী চাকমা।

‘মিলি মৈত্রী বন্ধনে গড়ি সংস্কৃতির সেতু’ স্লোগান সামনে রেখে এ নাট্যোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এ আয়োজনে অংশ নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা মহানগরীর দুটি নাট্যদল দৃশ্যপট ও প্রাঙ্গণেমোর। এ ছাড়া ভারতের ত্রিপুরা থেকে নাট্যভূমি, কলকাতা থেকে সুন্দরম ও কালিন্দী ব্রাত্যজন এ আয়োজনে অংশ নেবে।

২৮ অক্টোবর এই নাট্যোৎসব উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানউদ্দিন।