বাতিঘর নাট্যমেলার শেষ দিনে প্রাচ্যনাটের নাটক
শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে আয়োজিত বাতিঘর নাট্যমেলার শেষ দিন আজ। এ উপলক্ষে সন্ধ্যা ৭টায় প্রাচ্যনাট মঞ্চস্থ করবে আজাদ আবুল কালাম নির্দেশিত নাটক ‘এ ম্যান ফর অল সিজনস’।
নাটকটি অনুবাদ করেছেন শাহেদ ইকবাল। মঞ্চনাটকটিতে অভিনয় করছেন শতাব্দী ওয়াদুদ, কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, শাহেদ আলী, রাহুল আনন্দ, শাহানা সুমী, শিরীন সুলতানা, রিতু সাত্তারসহ অনেকে। সংগীত পরিকল্পনায় রয়েছেন রাহুল আনন্দ।
রবার্ট বোল্টের লেখা ‘এ ম্যান ফর অল সিজনস’ নাটকটি ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রকাশের পর ১৯৬১ সালের ২২ নভেম্বর নিউইয়র্কের এএনটিএ থিয়েটারে মঞ্চস্থ হয়।
প্রাচ্যনাট নাট্যদল নাটকটি প্রথম মঞ্চে আনে ১৯৯৯ সালের ২৪ জুন। চলতি বছরের এপ্রিলে নাটকটি সর্বশেষ মঞ্চায়িত হয়েছিল।
নাটক প্রসঙ্গে
নাটকটির ঐতিহাসিক পটভূমি ষোড়শ শতকের ইংল্যান্ড। মধ্যযুগের শেষ দিকে শুধু ইংল্যান্ড নয় সমগ্র ইউরোপে তখন পরিবর্তনের জোয়ার এসেছিল। ফলে ধর্ম, রাজনীতি এবং অর্থনীতির মধ্যকার বিরোধ হয়ে ওঠে অনিবার্য। ১৫২০-এর দ্বিতীয় অর্ধ হতে ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরি এবং পোপের মধ্যে বিরোধের সূচনা ঘটে। যার পরিণতি ‘দি ইংলিশ রিফর্মেশন’।
রাজা অষ্টম হেনরি সিংহাসনে আরোহণের সময় তাঁর ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী স্পেনের রাজকন্যা ক্যাথরিনকে বিয়ে করেন। দুই খ্রিস্টীয় রাষ্ট্রের বন্ধুত্বের কথা চিন্তা করে পোপ আইনের সংশোধন করে এই বিয়েতে মত দেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই রাজনৈতিক কারণে দুই দেশের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়। ক্যাথরিনের কোনো ছেলে সন্তান ছিল না, এদিকে রাজা হেনরি অ্যান বুলেন নামক এক মহিলার প্রেমে পড়েন। এরপর রাজা তাঁর বিয়ে অবৈধ দাবি করে পোপের কাছে বিচ্ছেদ অনুমোদন করার আবেদন করেন। পোপ তাতে অসম্মত হলে রাজা ‘অ্যাক্ট অব সুপ্রিমেসি’ বিল পাস করে নিজেকেই ইংল্যান্ডের চার্চের প্রধান বলে অভিষিক্ত করেন এবং বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে অ্যান বুলেনকে বিয়ে করেন।
রোমের সবাই এ বিয়ে মেনে নিলেও সে সময়কার লর্ড চ্যান্সেলর স্যার টমাস মোর এ বিয়েতে সম্মতি দেননি। তিনি প্রতিবাদও করেননি।তবে এ ঘটনার প্রতিবাদে শুধু তিনি নিজ পদ থেকে ইস্তফা দেন। এই নাটকের ঘটনাপ্রবাহ মূলত টমাস মোরকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। তৎকালীন সমাজ ও নিজের সাথে দ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর চিন্তাধারার সুস্পষ্টতাই নাটকের মূল ভাবনা।