আইলান কুর্দিকে উৎসর্গ করে ‘ত্রিংশ শতাব্দী’
যুদ্ধ-যন্ত্রণার সাম্প্রতিক প্রতীক আইলান কুর্দিকে উৎসর্গ করে স্বপ্নদলের যুদ্ধবিরোধী প্রযোজনা ‘ত্রিংশ শতাব্দী’র বিশেষ মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল ১৭ অক্টোবর, শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে। বাদল সরকারের মূল রচনা অবলম্বনে স্বপ্নদলের আলোচিত ও দর্শকনন্দিত প্রযোজনা ‘ত্রিংশ শতাব্দী’র রূপান্তরসহ নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার নিজ শহর কোবানি দখলকারী আইএস জঙ্গিদের নির্বিচার গণহত্যা থেকে বাঁচার জন্য সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তিন বছরের শিশু আইলান বাবা-মা-ভাইয়ের সঙ্গে সাগর পাড়ি দিয়ে আশ্রয়ের প্রত্যাশায় গ্রিসে যাওয়ার পথে নৌকাডুবিতে মারা যায়।
তুরস্কের উপকূলে ভেসে ওঠা এবং বালুর মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা তার ছোট নিথর দেহ তথাকথিত সভ্যতা আর বিশ্ববিবেককে যেন এক অবশ্যম্ভাবী প্রশ্নের সম্মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়!
যুদ্ধ-উন্মাদনার বিরুদ্ধে শৈল্পিক প্রতিবাদ ‘ত্রিংশ শতাব্দী’র মূল কাহিনী পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকির আণবিক বোমা বিস্ফোরণের অনভিপ্রেত বিষাদময় পরিণতি। এর সমান্তরালে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বসনিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান-ভারত, ইরাকে আগ্রাসন, গাজা-কুয়েত-সিরিয়া-তিউনিসিয়া-ইয়ামেন-তুরস্ক-মিয়ানমারে সাম্প্রতিক বর্বরতা প্রভৃতি প্রসঙ্গ।
‘ত্রিংশ শতাব্দী’ প্রযোজনায় নানাবিধ দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে যুদ্ধবাজ-যুদ্ধাপরাধী-অশান্তিকামীদের স্বরূপ এবং তাদের কর্মের তাৎক্ষণিক ও সুদূরপ্রসারী বীভৎসতার চিত্র উদ্ঘাটিত হয়েছে। সভ্যতা ধ্বংসকারী মানবসৃষ্ট যুদ্ধ-গণহত্যা-অনাচারের বিপরীতে মানুষ হিসেবে বর্তমান কর্তব্য অনুধাবন এবং এ ক্ষেত্রে দর্শককে সিদ্ধান্ত গ্রহণের মুখোমুখি স্থাপনই ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ প্রযোজনার প্রত্যাশা।
‘ত্রিংশ শতাব্দী’ প্রযোজনার গ্রন্থিকরা হলেন—জুয়েনা শবনম, ফজলে রাব্বী সুকর্ণ, সামাদ ভূঞা, শিশির সিকদার, মোস্তাফিজুর রহমান, জেবুননেসা, রেজাউল মাওলা, মেহেদী রানা, তানভীর শেখ, জাহিদ রিপন প্রমুখ। এদিন ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ প্রযোজনার ৭২তম মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে।
স্বপ্নদলের ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ ভারতের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় নয়াদিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায় (এনএসডি) অনুষ্ঠিত ভারতের এশিয়ার বৃহত্তম ও ভারতের রাষ্ট্রীয় নাট্যোৎসব ‘১৭তম ভারত রং মহোৎসব-২০১৫’-এ নির্বাচিত হয় এবং সেখানে প্রযোজনাটির সফল মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়।