রুটি বানানো থেকে দুধ দোয়ানো, সব করেছেন ভূমি!
অভিনয় দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেননি। টানা ছয় বছর যশরাজ ফিল্মসে কাজ করেছেন অ্যাসিসটেন্ট কাস্টিং ডিরেক্টর হিসেবে। তবে অভিনয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন অভিষেকেই। ২০১৫ সালে রোমান্টিক কমেডি ‘দম লাগা কে হ্যায়শা’ দিয়ে অভিষেক তাঁর। এ ছবিতে শারীরিকভাবে মোটা নববধূর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। পেয়েছিলেন ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড।
‘দম লাগা কে হ্যায়শা’ ছবিতে অভিনয় করার জন্য ভূমিকে ৩০ কেজি ওজন বাড়াতে হয়েছিল। বলেন, ‘আমি মুম্বাইয়ের মেয়ে। কিন্তু ছবির কাহিণী উত্তরাখন্ডের হরিদ্বারের। অনেক কিছুই জানা ছিল না, শিখতে হয়েছিল। মুম্বাইয়ের হিন্দি আর হরিদ্বারের হিন্দির মধ্যে বেশ পার্থক্য। আমাকে স্থানীয় ভাষায় কথা বলা শিখতে হয়েছিল।’
শুধু তাই নয়, অভিনয়ের প্রয়োজনে ভূমিকে গৃহস্থালির কাজকর্ম শিখতে হয়েছিল। কীভাবে রান্না করতে হয়, তাও শিখতে হয়েছিল। ভূমির ভাষায়, ‘রুটি ও চা বানানো সহজ মনে হতে পারে, কিন্তু যদি আগে না করেন, তো কঠিন লাগবেই।’
‘শুটিংয়ের দুই সপ্তাহ আগে হরিদ্বারে গিয়েছিলাম। স্থানীয় অনেক পরিবারের সঙ্গে মিশেছি। ঘটিবাটি পরিষ্কার করেছি, তাদের ছেলেমেয়ের দেখাশোনা করেছি। চরিত্রের প্রয়োজনে আমি স্থানীয় বিউটি পারলারে গিয়েছি, ম্যানিকিউর-ফেসিয়াল করেছি।’
‘দম লাগা কে হ্যায়শা’ ছবিতে শেষ গান ছিল ‘তু মেরি’। এ গানের জন্য সারাদিন রিহার্সেল করতে হয়েছিল ভূমি পেদনেকারকে। বলেন, ‘অতিরিক্ত ওজন নিয়ে নাচ করা আমার জন্য খুব কঠিন ছিল।’
দুই বছর পর অক্ষয় কুমারের সঙ্গে ‘টয়লেট- এক প্রেম কথা’ ছবিতে অভিনয় করেন ভূমি। এ ছবিতে ‘গোরি তু লাট মার’ গানে অক্ষয়ের সঙ্গে নাচেন তিনি। এর জন্যও কম পরিশ্রম করতে হয়নি তাঁর। খবর মুম্বাই মিররের।
‘আমরা ওই গানের মাধ্যমে একটি গল্প বলতে চেয়েছিলাম। তাই আমাকে প্রকাশভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে হয়েছিল। যদিও আমি নাচ উপভোগ করি, তবু আমি তা করতে চাইনি। যাহোক, ছবির জন্য আমাকে স্থানীয় খরিবলি ভাষা শিখতে হয়। মজার ব্যাপার হলো, প্রত্যেক ছবিতেই আমাকে ভাষা ও উচ্চারণ শিখতে হয়েছিল। সৌভাগ্যবশত, আমি পেরেছিলামও।’
‘টয়লেট- এক প্রেম কথা’ ছবির জন্য ভুপালেও ভ্রমণ করতে হয় এ অভিনেত্রীকে। সেখানে এমন নারীদের সঙ্গে দেখা করেন, যারা টয়লেট না থাকায় স্বামীর ঘর ছেড়েছিল।
ভূমি বলেন, ‘আমাকে সাইকেল চালানোও শিখতে হয়েছিল। যখন ছোট ছিলাম, সাইকেল চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু অভিনয় আমাকে সাইকেল চালানোর ভয় জয় করিয়েছিল। এখন আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আমি স্কুটিও চালাতে পারি। কীভাবে গরুর দুধ দোয়াতে হয়, তাও শিখতে হয়েছিল আমাকে।’
ভূমি পেদনেকারের পরবর্তী ছবি ‘সন চিরিয়া’, এ বছরই মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। এতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন সুশান্ত সিং রাজপুত। এ ছবিতেও তাঁকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছিল।
ভূমি বলেন, ‘আন্ধেরির আরামনগরে বহু দূর হেঁটে মাথায় করে পানি আনতে হয়েছিল। চাম্বালের মেয়েরা কীভাবে জীবনযাপন করে তা বুঝতে হয়েছিল। আমার প্রথম ইতিহাস-আশ্রিত ছবি তাখত-এও অনেক কাজ করতে হবে।’
১৯৮৯ সালের ১৮ জুলাই মুম্বাইয়ের জুহুতে জন্মগ্রহণ করেন ভূমি পেদনেকার। তাঁর অভিনীত ‘শুভ মঙ্গল সাবধান’ ছবিও বেশ জনপ্রিয়তা পায়।