এফডিসির পরিত্যক্ত ফ্লোরে শুটিং, ভোগান্তি, শঙ্কা
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) ৪ নম্বর ফ্লোরে ‘ক্যাপ্টেন খান’ ছবির একটি আইটেম গানের জন্য সেট নির্মাণ করা হচ্ছে গত ২৩ জুলাই থেকে। তবে বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাচ্ছে সবকিছু। সাতটি জায়গা দিয়ে পানি পড়ছে। ফ্লোরের পাশে একটি স্টোররুম রয়েছে যেখানে শুটিংয়ের সামগ্রী ও শিল্পীদের পোশাক রাখা হয়। সেখানেও বৃষ্টির পানিতে ভিজে যাচ্ছে সবকিছু। এফডিসির পরিত্যক্ত এই ফ্লোরে নিয়মিত শুটিং করা হয় দুর্ঘটনার শঙ্কা মাথায় নিয়েই।
সেট ডিরেক্টরের সহকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চারদিন ধরে এখানে কাজ করছি। সাধারণত সেট নির্মাণ করার জন্য কাঠ, ককশিট, রং ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু বৃষ্টির পানিতে সব ভিজে যাচ্ছে। একটি বিল্ডিংয়ের কাঠামো তৈরি করছিলাম, বৃষ্টির জন্য এখন ত্রিপল দিয়ে ঢেকে কাজ করছি। মোট সাত জায়গাতে বৃষ্টির পানি পড়ছে। এমন অবস্থায় একটি কাজ আমাদের বারবার করতে হচ্ছে। শুটিং শুরু হলে তখন যদি বৃষ্টি হয় তা হলে কীভাবে শুটিং করবে সেটা বুঝতে পারছি না।’
শিল্প নির্দেশক দীপু বাউল বলেন, ‘শুধু ফ্লোর নয়। পাশে স্টোর রুমেও পানিতে সব ভিজে যাচ্ছে। এখানে আমরা সেটের বিভিন্ন আসবারপত্র রেখে থাকি, যা শুটিংয়ে ব্যবহার করা হয়। শিল্পীদের পোশাক রাখি যা উনারা শুটিংয়ের সময় ব্যবহার করে থাকেন। আগামীকাল এখানে শুটিং করার কথা রয়েছে। কীভাবে মালপত্র শুকাবে সেই উপায় পাচ্ছি না। শুটিংয়ের সময় বৃষ্টি হলে কী যে করব!’
লাইটম্যান আবদুর রহমান বলেন, ‘এখন না হয় বৃষ্টিতে ভিজে গেলে আবার ঠিক করে ফেলা যাবে। কিন্তু আমরা যখন লাইট সেট করব তখন যদি বৃষ্টি হয়, এর এক ফোঁটা বৃষ্টিও বিদ্যুতের তারে পড়ে, তাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কর্তৃপক্ষের এখনই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
এফডিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও ৪নম্বর ফ্লোরের ইনচার্জ হিমাদ্রি বড়ুয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘আসলে এই বিল্ডিং এখন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিছুদিন পর বিল্ডিংটি ভাঙা শুরু হবে। যে কারণে আমরা সব কিছু জানার পরও এখানে মেরামত করতে পারছি না।’
কবে ভাঙা হবে, এখন কেন এই ফ্লোরগুলো ভাড়া দেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে হিমাদ্রি বলেন, ‘আমাদের এখানে ফ্লোরের সংখ্যা কম। যে কারণে ভাড়া দিতেই হচ্ছে। বিল্ডিং ভাঙা ও নতুন বিল্ডিং করার বিষয়টি এখন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আছে। আশা করি, খুব তাড়াতাড়ি একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) বিষয়টি অনুমতি পেলেই কাজ শুরু হবে। এই স্থানে বহুতল ভবন করার পরিকল্পনা রয়েছে।’
এখন যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তার দায়িত্ব কে নেবে জানতে চাইলে হিমাদ্রি বলেন, ‘আসলে যাঁরা নিচ্ছেন তাঁরা সব জেনেই নিচ্ছেন। তবে এখন যে বিল্ডিং ভেঙে পড়বে বা বড় দুর্ঘটনা ঘটবে তা নয়। তারপরও আমরা বিষয়টি নিয়ে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।’