সালমান শাহ নয়, চলচ্চিত্রশিল্পী সংকট মান্নার জন্য : মিশা
চলচ্চিত্রশিল্পী সংকট নিরসনে আবারও ‘নতুন মুখের সন্ধানে ২০১৮’ প্রতিযোগিতাটি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির তরফ থেকে শুরু হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবের সাইমন এইচ সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিচালক সমিতি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর। এক বক্তবে মিশা বলেন, ‘সালমান শাহ নয়, চলচ্চিত্রশিল্পী সংকট মান্নার জন্য।’
মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমি ঢাকার ছেলে। আমার উচ্চারণে সমস্যা ছিল। আরো বেশ কিছু সমস্যা ছিল। সবগুলো সমস্যা গ্রুমিংয়ের মধ্য দিয়ে প্রাথমিক ভাবে চেষ্টা করা হয়েছে সমাধানের। এর আগে রাজ্জাক স্যার , ফারুক ও আলমগীর স্যাররা এসেছেন। তখন উনারাও নতুন ছিলেন এবং উনারাও একটা গ্রুমিংয়ের মধ্য দিয়ে এসেছেন। তখন এখনকার মতো গ্রুমিং ছিল না। কিন্তু পরিচালক স্যারেরা উনাদের তৈরি করেছেন। আমি বিশ্বাস করি, শিল্পীদের ‘নতুন মূখের সন্ধানে’র মাধ্যমে গ্রুমিং করে তৈরি করা সম্ভব। অনেকটা দেরিতে হলেও পরিচালক সমিতি আবারও নতুন শিল্পীদের সংগ্রহ করছেন। এ জন্য তাঁদের ধন্যবাদ।’
শিল্পীসংকট নিয়ে মিশা বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্রে অনেক সংকট। ভালো চলচ্চিত্র হয় না। ভালো ছবির সংকট। প্রযোজক নেই। তাদের একটা সংগঠন ছিল তাও আজ নেই। গুণী পরিচালকের সংকট, যাঁরা কাজ করতেন তাঁরা অনেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন। ভালো গল্পের সংকট। শিল্পী সংকট। হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পী ছাড়া তেমন কোনোশিল্পী নেই যাঁদের টানে দর্শক হলে যাবেন। ১৮ কোটি মানুষের জন্য এই কজন শিল্পী দিয়ে চলচ্চিত্র বানানো সম্ভব নয়। তার চেয়ে বেশি সংকটা জসিম ভাই ও মান্নার মতো গবেষকের।
মান্না ও সালমান শাহকে নিয়ে মিশা বলেন, ‘আমাকে যদি কেউ বলে চলচ্চিত্রের নায়ক মান্না মারা যাবার পর বেশি ক্ষতি হয়েছে নাকি সালমান শাহ মারা যাবার পর বেশি ক্ষতি হয়েছে? আমি বলব, মান্না মারা যাবার পর বেশি ক্ষতি হয়েছে। কারণ সালমান শাহ ছিল জনপ্রিয় আর মান্না ছিল চলচ্চিত্র গবেষক। কোন ছবি কোন সময় মুক্তি দিতে হবে? কীভাবে প্রচারের কাজ চলবে? কেন এই সময় ছবিটি মুক্তি পাবে? ছবিটি কেমন হবে? সব বিষয়ে মান্না গবেষণা করতেন। যে কারণে তাঁর ছবি ছিল সফল আর প্রযোজকরাও তাঁর কাছে আসত ছবি নিয়ে। তৈরি হতো নতুন নতুন চলচ্চিত্র।
সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানে আজ আরো উপস্থিত ছিলেন পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান, শাহিন সুমন, শাহিন কবির টুটুল, নায়ক ফারুক, নায়ক আলমগীর, মিশা সওদাগর, এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যেগে এবং বিএফডিসির সহযোগিতায় ‘অফট্র্যাক ইভেন্টস অ্যান্ড অ্যাডভারটাইজিং’ এবং ‘টিম ইঞ্জিন’-এর ব্যবস্থাপনায় শুরু হতে যাচ্ছে‘নতুন মুখের সন্ধানে ২০১৮’ । আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে প্রতিযোগিতার মূল কার্যক্রম। সেদিন থেকেই শুরু হবে নতুন শিল্পীদের রেজিস্ট্রেশন। এই রিয়েলিটি শো সম্প্রচার করবে এশিয়ান টিভি।
মান্না, সোহেল চৌধুরী, দিতি, অমিত হাসান, আমিন খান, মিশা সওদাগরসহ জনপ্রিয় অনেক শিল্পী চলচ্চিত্রে এসেছেন ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে এর আগে ১৯৮৪, ১৯৮৮ ও ১৯৯০ সালে মোট তিনবার ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল।