‘নতুন শিল্পীরা সম্মান করে না, পা তুলে বসে থাকে’
এ সময়ের শিল্পীরা সম্মান করে না জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিত্রনায়িকা নূতন। সম্প্রতি এফডিসিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভায় তিনি এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নায়িকা নূতন বলেন, ‘শৈশব থেকে আমি চলচ্চিত্রে কাজ করছি। জীবনের পুরোটা সময় কাটিয়েছি চলচ্চিত্রের সঙ্গে। এখানে কী পেয়েছি? এফডিসিতে কোনো অনুষ্ঠান হলে দাওয়াত পাই না। চলচ্চিত্র শিল্পী হিসেবে সারা দেশের মানুষ এখনো এক নামে চেনেন, সম্মান করেন। তবে কোনো অনুষ্ঠানে গেলে জুনিয়র শিল্পীরা সম্মান করে না, তারা পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকে। আমরা চারপাশে ঘুরি, তবে বসার জায়গা পাই না।’
সিনিয়র হিসেবে এতটুকু মূল্য দিতে চায় না জানিয়ে নূতন বলেন, ‘অথচ একটা সময় ছিল যখন আমরা নিজেদের এক পরিবারের অংশ মনে করতাম। ছোটদের আদর করতাম আর বড়দের করতাম সম্মান।’
মুক্তিযোদ্ধা অভিনেতা আমির হোসেন বাবুর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এই স্মরণসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র নৃত্য পরিচালক সমিতি। নায়ক মান্না ডিজিটাল কমপ্লেক্সে আয়েজিত এই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন পরিচালক শাহ আলম কিরণ, শিল্পী চক্রবর্তী, নায়ক আলমগীর, এ আর জাহাঙ্গীর, নৃত্য পরিচালক ও অভিনেতা জাবেদ, এস আলম, ওমর সানী, জায়েদ খান প্রমুখ।
নায়ক আলমগীর বলেন, ‘আমার সঙ্গে বাবুর সম্পর্কটা ছিল ভাই-বন্ধুর মতো। আমি শুটিং শেষ করে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে রাত ৮টার দিকে আড্ডা দিতাম। ঠিক এই সময় বাসায় গিয়ে উপস্থিত হতো আমির হোসেন বাবু। যেন আমরা একটা পরিবার। আমি এ পর্যন্ত যতগুলো গানে অভিনয় করেছি, তার নব্বই ভাগ কাজ করেছি বাবুর সঙ্গে। অনেক ফ্যাশন সচেতন ছিল বাবু। এমন হয়েছে যে তার একটি পোশাক আমার পছন্দ হয়েছে, সেটি পরে আমি শট দিয়েছি। সম্পর্কটা শুধু বাবুর সঙ্গে ছিল না, ছিল পরিবারের সঙ্গে, যা এখনো রয়েছে। বাবুর মৃত্যুর পর একদিন বাবুর ছোট বোন ডলি এসে বলল, বাবু ভাই নেই তো কী হয়েছে। আজ থেকে আপনি আমাদের বড় ভাই। সেই থেকে আমরা একই পরিবার। ডলির হাজবেন্ড আমার ব্যবসায়িক পার্টনার।’
নায়িকা অঞ্জনা স্মৃতিচারণ করে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, ‘বাবু মারা যাওয়ার পর আমি তাকে দেখতে যেতে পারিনি। কারণ, তার মৃত চেহারাটা আমি দেখতে চাইনি। আমরা একসঙ্গে বিটিভিতে কাজ করেছি। চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। এত সুন্দর বন্ধুত্ব অনেকের সঙ্গেই ছিল না। আমরা শিল্পী আর টেকনিশিয়ানরা ছিলাম একে অন্যের পরিপূরক।’