নাটককে এখনো পণ্য ভাবতে শিখিনি : মাসুদ সেজান
‘আমার জানা মতে অনেক পরিচালক নীরবে সরে যাচ্ছেন। তাঁদের সরে যাওয়া কোনো সমাধান হতে পারে না। আমি আমার কাজের জায়গায় আপস করতে চাই না।’ কথাগুলো এনটিভি অনলাইনকে বলছিলেন মাসুদ সেজান।
বর্তমানে নাটকের বাজেট ও অন্য আরো অনেক বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়ে ফেসবুকে গতকাল রোববার একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় এই নাট্যনির্মাতা।
মাসুদ সেজান লিখেছেন, “দর্শকের প্রতি আমার দায় থেকে। নাটকের আজকের এই নিম্নগামী মানের জন্য দোষ টেলিভিশন চ্যানেলের না, কারণ তারা গণমাধ্যম নামের আড়ালে মূলত ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান। দোষ বিজ্ঞাপন-এজেন্সির না, কারণ তারা কেবলই মধ্যস্বত্ত্বভোগী বেনিয়ার দল। দোষ অভিনেতা-অভিনেত্রীর না, কারণ ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে প্রতি মাসে তাদের নির্ধারিত দিনগুলি বিক্রি হয়ে গেলে আর কিছুই করার থাকে না। আমি দেখছি, যাবতীয় দোষ কিছু ছুটা প্রডিউসার এবং কিছু ভিখিরি ডিরেক্টরের। যেই এক ঘণ্টার নাটক গত দুই-তিন বছর আগের ঈদেও চ্যানেল চার থেকে পাঁচ লাখ টাকায় কিনেছে, বিজ্ঞাপনের রেটের দোহাই দিয়ে এখন তারা সেই দাম প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে।”
মাসুদ সেজান আরো লিখেছেন,‘একটি ছয় অথবা সাত খণ্ডের নাটকের প্রতি পর্বের দাম যেখানে অন্তত দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ছিল, তার দাম এখন নাকি ৬০-৭০ হাজার হয়ে গেছে। বিবিধ ধান্দাবাজ কিছু প্রডিউসার এবং ভিখিরি-স্বভাব কিছু ডিরেক্টর অবনত মস্তকে কুঁই কুঁই করতে করতে তা মেনেও নিচ্ছে। তারা এতটাই অসহায়, যেন একটা কাজ কোনো রকমে বাগাতে পারলেই ধন্য।’
মাসুদ সেজান জানান তিনি সস্তা হতে পারবেন না। এ বিষয়ে তিনি লিখেন,‘কাস্টিংসহ অন্যান্য বশ্যতা স্বীকার করে, এজেন্সির কাজ তো করিই না, সরি, কতিপয় চ্যানেলের কর্মকর্তা, নাটককে এখনো পণ্য ভাবতে শিখিনি। আমি এতটা সস্তা হতে পারব না। নাটকের শিল্পমান বজায় রাখার জন্য আমার নির্ধারিত বাজেটের বাইরে, প্রয়োজনে আগামী ঈদে কোনো কাজই করব না।’
এ ধরনের পরিস্থিতি কীভাবে কাটানো যায় জানতে চাইলে এনটিভি অনলাইনকে মাসুদ সেজান বলেন,‘আমি মনে করি এই সমস্যা সবার। আমার একার নয়। সবাইকে এক সাথে বসে এর সমাধানের পথ খুঁজে বের করা উচিত। এখন যে অবস্থা চলছে এটাকে শিল্পচর্চা বলে না।আমি আগেও বলেছি এখনো বলতে চাই আমি কোনো বিষয়ে আপস করব না।’
এক যুগের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের মিডিয়ায় কাজ করছেন মাসুদ সেজান। নাট্য নির্মাতা হিসেবে পেয়েছেন সফলতাও। তাঁর পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য নাটক হলো ‘এইম ইন লাইফ’, ‘চলিতেছে সার্কাস’, ‘লং মার্চ’ ও ‘রেড সিগনাল’ ইত্যাদি।