প্রশ্নবিদ্ধ শ্রীদেবীর মৃত্যু!
শ্রীদেবীর মৃত্যুকে নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। আর এ রহস্য তৈরি করেছে শ্রীদেবীর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পাওয়া প্রতিবেদনে উঠে এসেছে—আপাতদৃষ্টিতে শ্রীদেবীর মৃত্যু হৃদরোগের কারণে হয়েছে বলে মনে করলেও ময়নাতদন্ত জানাচ্ছে দুর্ঘটনাবশত পানিভর্তি বাথটাবে পড়ে অচেতন হয়ে যান তিনি। ফলে পানিতে ডুবে মৃত্যু ঘটে তাঁর। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্রীদেবীর শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতিও পাওয়া গেছে।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই কিছু প্রশ্ন দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। কীভাবে অজ্ঞান হলে শ্রীদেবী? অ্যালকোহলের পরিমাণ কেমন ছিল, যা শ্রীদেবীকে অচেতন করতে পারে? এসব প্রশ্নের মুখে এখন আর টিকছে না শ্রীদেবীর হৃদরোগে মারা যাওয়ার খবরটি।
‘খালিজ টাইমস’ প্রথমে জানিয়েছিল, স্বামী বনি কাপুর সে সময় হোটেলে শ্রীদেবীর ঘরে ছিলেন। শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ তিনি মুম্বাই থেকে দুবাই পৌঁছান। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি শ্রীদেবীর হোটেলেই পৌঁছেছিলেন তিনি। স্ত্রীর সঙ্গে মিনিট ১৫ আড্ডা দেওয়ার পর ডিনারের প্রস্তাব দেন। আর তাতে রাজি হয়ে যান শ্রীদেবী। ডিনারে যাবেন বলে তৈরি হতে গিয়েছিলেন বাথরুমে। কিন্তু অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি বেরিয়ে আসেননি। তখন বনি বাথরুমের দরজা ভেঙে স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। অচতেন অবস্থায় শ্রীদেবী নাকি বাথটাবের ভেতরেই পড়ে ছিলেন। ঘরে এনে স্ত্রীর সংজ্ঞা ফেরানোর নানা চেষ্টা করেন বনি। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। পরে এক বন্ধুকে ডেকে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসকরা শ্রীদেবীকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। কাপুর পরিবারের তরফে জানানো হয়, হার্ট অ্যাটাকেই মৃত্যু হয়েছে শ্রীদেবীর।
আবার অন্য একটা সূত্র বলছে, রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ রুম সার্ভিসে ফোন করে তাঁর ঘরে পানি দিতে বলেছিলেন শ্রীদেবী। মিনিট ১৫ পর হোটেলের এক কর্মী শ্রীদেবীর ঘরে জল দিতে গিয়ে তাঁর কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না। একাধিকবার ডোর বেল বাজানোর পর যখন দরজা খোলেননি শ্রীদেবী। তখন হোটেল কর্তৃপক্ষ ভেতর থেকে বন্ধ থাকা দরজা ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। ঘরে ঢুকে তাঁরা দেখেন, শ্রীদেবী বাথটাবে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তা হলে বনি সেই সময় কোথায় ছিলেন?
জুম টিভি জানাচ্ছে, মৃত্যুর আগে শ্রীদেবী অবস্থান করছিলেন জুমেরিয়াহ এমিরেটস টাওয়ার হোটেলের ২২০১ নম্বর কামরায়। তাই পরবর্তী অনুসন্ধানের জন্য সে হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছেন দুবাইয়ের পুলিশ কর্মকর্তা।
নানা জটিলতার কারণেই গতকাল শ্রীদেবীর মরদেহ আসার কথা থাকলেও তা আর হয়ে ওঠেনি। দুবাইতে ভারতের রাষ্ট্রদূত নভোদীপ সুরি বলেন, ‘আমরা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি, যেন যত দ্রুত সম্ভব শ্রীদেবীর মরদেহকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। আমাদের কাজ অর্ধেক হয়েছে। এ ছাড়া আমরা শ্রীদেবীর পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে, এ ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দু-তিন দিন সময় লাগে। তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। আমরা এ ব্যাপারটা বিশেষজ্ঞদের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি।’