সিরিয়ার শরণার্থী শিশুদের পাশে প্রিয়াঙ্কা
শুধু বলিউডের রঙিন দুনিয়াই নয়, বাস্তবতার কষাঘাতে নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের পাশেও দেখা যায় বলিউড তারকাদের। মানবতার স্বার্থে বরাবরই অধিকার বঞ্চিত এসব অসহায় মানুষের সাহায্যের জন্য ছুটে যান তাঁরা। সেই মানবতার টানেই জর্ডানের রাজধানী আম্মানে ছুটে গিয়েছেন ইউনিসেফের গ্লোবাল গুডউইল অ্যাম্বাসেডর, ‘বেওয়াচ’ খ্যাত তারকা প্রিয়াংকা চোপড়া। টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে প্রকাশ, গত ১০ সেপ্টেম্বর সেখানেই সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের শিকার শরণার্থী শিশুদের সঙ্গে একটি দিন কাটান প্রিয়াঙ্কা।
শরণার্থী শিশুদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘তাঁরা খুবই আবেগপ্রবণ। আমাদের প্রতিটি দিন আমরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার মধ্যে কাটাই। এটা চিন্তা করতেই কষ্ট লাগে যদি এই মুহূর্তের জন্য আমাদের কাছ থেকে এই সুযোগ-সুবিধাগুলো কেড়ে নেওয়া হয়। আজকে আমরা সিরীয় শরণার্থী শিবিরের অনেক পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি, এবং আমরা মরিয়া হয়ে তাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছি, যাতে তাঁরা জীবনে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারে।’
২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর সিরিয়া থেকে পঞ্চাশ লাখেরও বেশি শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছে জর্ডান, লেবানন, ইরাক, মিসর ও তুরস্কে। জর্ডানে অবস্থান করছে এক লাখ ৮০ হাজার শরণার্থী। প্রিয়াঙ্কা জানান, এসব শরণার্থীদের আশি ভাগই এখন শরণার্থী শিবিরের বাইরে, নগরে বা গ্রামে অবস্থান করছে।
শরণার্থীদের সঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো ছবি ও ভিডিও নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে প্রিয়াংকা বলেন, ‘আম্মানে বসবাসরত সিরীয় শরণার্থীদের সংখ্যাটা বিশাল। প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার। শরণার্থী পরিবারগুলোর জীবনধারনের জন্য খুব কমই সুযোগ সুবিধা রয়েছে এবং ৬ বছর ধরে তাদের পরিবারের দেখভালের জন্য তারা যেখান থেকে পারছে অর্থ জোগাড় করার চেষ্টা করছে।’
তবে ইনস্টগ্রামে এসব ছবি প্রকাশ করায় অনেকে প্রিয়াঙ্কার সমালোচনাও করেছেন। তবে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘আমি কখনো ছবি শেয়ার করি না যখন আমি কোনো ভ্রমণে থাকি। কিন্তু এবার আমি দিতে বাধ্য হয়েছি কারণ তাদের সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তে আমার মধ্যে নতুন অনুভূতির জন্ম দিয়েছে। আমার রাগ ও যন্ত্রণা হয়েছে এটা দেখে যে এই সুন্দর সম্ভাবনাময় শিশুদের ভবিষ্যৎ যুদ্ধের কারণে কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সবাই জানে, যুদ্ধ সিরিয়ায় কী ক্ষত করেছে। এর পরিবর্তে প্রাণোচ্ছ্বাস, আনন্দ ও আশা আমাকে অনুপ্রাণিত করে। এই শিশুরা আমার অনুপ্রেরণা। তারা আপনারও অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত।’
শুধু নিজেই সিরিয়ায় গিয়ে ক্ষান্ত হননি প্রিয়াঙ্কা। জুম টিভির খবরে প্রকাশ, বলিউডের সহকর্মীদেরও আম্মানে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, ‘আমি এখান থেকে বার্তা ও ভালোবাসা দিতে চাই ভারত চলচ্চিত্রের বড় বড় তারকাকে। শাহরুখ খান, সালমান খান, অক্ষয় কুমার, কারিনা কাপুর ও আনুশকা শর্মাকে। আমি চাই তাঁরা এখানে আসুন। এই অসাধারণ বাচ্চারা তাঁদের বিশাল ভক্ত।’