সমিতির সূচনাকারী হিসেবে মিলল আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি যাত্রা শুরু করে ১৯৮৪ সালে। সমিতির প্রতিষ্ঠাতা চলচ্চিত্রপাড়ার ‘মিয়াভাই’ বলে সুপরিচিত আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। সংগঠনটির জন্য প্রস্তাব করেছিলেন মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা। আশরাফ উদ্দিন আহম্মেদ উজ্জ্বল ছিলেন বিশেষ সহযোগী। সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন নায়করাজ রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শরিফ।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি সোহেল রানা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আশির দশকে আমাদের চলচ্চিত্র ছিল বেশ জমজমাট। শিল্পীরা নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতেন। সবার সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া থাকলেও কোনো সমস্যা হলে সমাধান কে করবে, সেটা কেউ জানত না। তখনো শিল্পীদের নিয়ে বহু অভিযোগ করতেন পরিচালকরা। আবার শিল্পীদেরও অভিযোগ ছিল টেকনিশিয়ানদের প্রতি। এমন সময় আমি ফারুককে বলি, সে যেন আমাদের শিল্পীদের নিয়ে একটি সংগঠন করার উদ্যোগ নেয়। তখন নায়ক ফারুককে সবাই মিয়াভাই বলে ডাকত, সম্মান করত।’
চিত্রনায়ক ফারুক বলেন, ‘সোহেল রানা ভাই আমাকে বলেন, আমি যেন শিল্পীদের নিয়ে একটা সমিতি করি। উনি বলার পরই আমি এ নিয়ে কাজ শুরু করি। শুরুতে আমরা ৫০ হাজার টাকা ফান্ড করে সমিতি চালু করি। সেখানে আমার ছিল ৪৫ হাজার টাকা আর নায়ক উজ্জ্বল দিয়েছিলেন পাঁচ হাজার টাকা। অনেকেই মনে করেছিল, আমি সমিতির সভাপতি হব; তবে আমি নিজে রাজ্জাক ভাইয়ের নাম প্রস্তাব করি এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন রাজ্জাক ভাই।’
আজ থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে একটি পরিচিতি বোর্ড টাঙানো হচ্ছে, যেখানে প্রতিষ্ঠাতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, প্রস্তাবক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা ও সহযোগী হিসেবে আশরাফ উদ্দিন আহম্মেদ নায়ক উজ্জ্বলের ছবি রয়েছে। বলা যায়, এর মাধ্যমেই সমিতির সূচনাকারীদের নাম আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেল।
আজ মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে এ নিয়ে একটি পোস্টও দেন শিল্পী সমিতির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। বোর্ডের ছবি শেয়ার দিয়ে তিনি ক্যাপশনে লেখেন, ‘শিল্পী সমিতি যাঁদের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল—১৯৮৪ সালে, স্যালুট আপনাদেরকে।’
আজ বিকেলে জায়েদ খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা সবাইকে সম্মানিত করতে চাই। যে কারণে সমিতির সভায় সবার অনুমতি নিয়ে আমরা এই তিন কিংবদন্তির ছবি সমিতিতে টাঙাচ্ছি। চলচ্চিত্র শিল্পী হিসেবে আমরা গর্ববোধ করি। সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজ্জাক ভাই ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ শরিফ ভাই, এটা জানি। আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না সমিতিটা আসলে কে প্রতিষ্ঠা করেছেন, কে প্রস্তাব করেছিলেন, আর কারাই বা সহযোগিতা করেছিলেন।’
জায়েদ খান আরো বলেন, পরিচিতি বোর্ডটি তিন জীবন্ত কিংবদন্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে সমিতিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।