সবাই উনার জন্য দোয়া করবেন : শাওন
কার্তিকের চাঁদ বড্ড প্রিয় ছিল নন্দিত নির্মাতা, কথাসাহিত্যিক প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের। ইট-পাথরের শহর ছেড়ে অনেক দিন ধরেই নুহাশপল্লীর সেই প্রিয় লিচুতলায় শায়িত আছেন তিনি। জীবনভর নুহাশপল্লীর গাছ, দীঘি লীলাবতি কিংবা সোঁদা মাটির গন্ধকে ভালোবেসে যাওয়া খ্যাতিমান এ ব্যক্তিত্বের আজ ৭১তম জন্মদিন।
বিশেষ দিনটি উপলক্ষে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। প্রতিবছরের মতো এবারও চ্যানেল আই প্রাঙ্গণের চেতনা চত্বরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘সিটি ব্যাংক-চ্যানেল আই হুমায়ূন মেলা’।
হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, সকালে সন্তানদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কেটেছেন। ফুল দিয়েছেন হুমায়ূনের কবরে।
‘আজ সকালে আমরা নুহাশপল্লীতে এসেছি সন্তানদের নিয়ে। সকাল ১০টায় কেক কাটা হয়েছে। তার পর সন্তানদের নিয়ে ফুল দিয়েছি হুমায়ূনের কবরে। তা ছাড়া তিনি কখনো জাঁকজমকভাবে জন্মদিন পালন করতেন না। যে কারণে আমরাও উনার জন্মদিনে বাড়তি কোনো আয়োজন করি না। সবাই দোয়া করবেন। উনি যেখানেই থাকেন, যেন ভালো থাকেন,’ বলেন শাওন।
নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘স্যারের মৃত্যুর পর থেকেই আমরা জন্মদিনটি শুরু করি নুহাশপল্লীতে আলোকসজ্জার মধ্য দিয়ে। গতকাল রাত ১২টায় আমরা পুরো নুহাশপল্লীতে মোমবাতি জ্বালিয়ে আলোকসজ্জা করেছি। স্যার বিশেষ দিনে এই আলোকসজ্জা করতেন। সকালে কেক কাটা হয়েছে, দুপুরে মিলাদ পড়ানো হবে।’
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়ার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ূন আহমেদ। তাঁর পিতার নাম ফয়জুর রহমান। মা আয়েশা ফয়েজ। বাবা ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৎকালীন পিরোজপুর মহকুমার এসডিপিও হিসেবে কর্তব্যরত অবস্থায় শহীদ হন। হুমায়ূন আহমেদের অনুজ মুহম্মদ জাফর ইকবাল বিজ্ঞান-শিক্ষক এবং কথাসাহিত্যিক; সর্বকনিষ্ঠ ভ্রাতা আহসান হাবীব রম্য সাহিত্যিক ও কার্টুনিস্ট।
নব্বই দশকের শুরুতে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে তাঁর। নিজের উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে হুমায়ূনের পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, নয় নম্বর বিপদ সংকেত, ঘেটুপুত্র কমলা। আগুনের পরশমণি, দারুচিনি দ্বীপ ও ঘেটুপুত্র কমলা চলচ্চিত্রের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন তিনি।
২০১০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর অন্ত্রে ক্যানসার ধরা পড়ে। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে ২০১২ সালের ১৯ জুলাই কোটি বাঙালিকে কাঁদিয়ে মৃত্যুবরণ করেন হুমায়ূন আহমেদ।