রাস্তার প্রাণীগুলোর পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ ওমর সানীর
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক। এর সংক্রমণ রোধে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে সরকারি ছুটি। বন্ধ হয়েছে দূরপাল্লার গণপরিবহন।
ঢাকার রাস্তা একেবারেই ফাঁকা। বন্ধ রয়েছে সাধারণ দোকান, প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন অনেকেই। এ অবস্থায় প্রাণীদের অবস্থা হচ্ছে আরো শোচনীয়। এ সময়ে ক্ষুধার্ত প্রাণীর পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করলেন নায়ক ওমর সানী।
আজ শুক্রবার নিজের ফেসবুকে প্রাণীদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করে সানী লিখেছেন, ‘আপনার আশপাশে থাকা প্রাণীগুলোকে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী কিছু খাবার দিন। ওরা খুব ক্ষুধার্ত।’
‘রাস্তাঘাটের দোকানপাট বন্ধ, তাই ওরা অসহায় ও ক্ষুধার্ত অবস্থায় আছে। এবং একটি কথা বলি সাথে সাথে নিজেরা বাঁচি, আমরা অন্য মানুষদের দিকে খেয়াল রাখি, আর আমাদের বাঁচাবার মালিক আল্লাহ।’
এর আগে ফেসবুক লাইভে এসে সবাই সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন ওমর সানী ও মৌসুমী। ওমর সানী বলেন, ‘সবাইকে সালাম। লাইভে আসার উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমরা একটা মহামারি গজবের মধ্যে অবস্থান করছি। দিন পার করছি। বর্তমানে বাসায় অবস্থান করছি আমি। আমার ছেলে ফারদিন ও মেয়ে ফাইজা আমাকে বাসা থেকে বের হতে দিচ্ছে না। আমি মনে করি, শুধু প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বলবেন, তা না। আমি মনে করি, আমাদেরও দায়িত্ব আছে। তারকা হিসেবে আমাদেরও দায়বদ্ধতা আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এর মধ্যেও আমি দেখতে পাচ্ছি অনেক মানুষ বিয়ের অনুষ্ঠান করছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের যে অবস্থান, সেটা নিয়ে এখন একটু কথা বলতে চাই। ইতালির মতো সুন্দর একটা রাষ্ট্র ধ্বংসলীলার মতো অবস্থায় গিয়ে পৌঁছেছে। আরো অনেক উন্নত রাষ্ট্র প্রায় ধ্বংসবস্থার দিকে। আমি যে এলাকায় থাকি, এখানে অনেক মানুষের সমাগম। আমাদের একটু সচেতন হতে হবে। মৃত্যু তো সবারই হবে। যেতে হবে আমাদের—এটাই সত্য। আমি যতটুকু স্টাডি করেছি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেটা বলেছে যে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, বারবার হাত ধোয়া। এই রোগের একটা বাজে দিক হচ্ছে, যে আক্রান্ত হচ্ছে সে প্রথমে বুঝতে পারে না। পরে এটা খারাপের দিকে যায়। ছোট একটি দেশ আমাদের, প্রায় ২০ কোটি মানুষ। দেশের নাগরিক হিসেবে আমি মনে করি, আমাদের চরম ভুল হয়েছে যে বিমানবন্দর আরো আগে বন্ধ না করা। ইতালির অনেক প্রবাসী ওখানে অবস্থান করছেন। এই ধরনের কোনো মহামারি যদি আসে পৃথিবীতে তখন কী হবে? আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে নবী করীম (সা.) তাঁর সাহাবিদের এই প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেন যে, ওই এলাকা থেকে বাইরে যাবা না। ঘরের মধ্যে আশ্রয়স্থল তৈরি করবা। পরিষ্কার থাকবা। ১৪০০ বছর আগের এই বাণীটি বর্তমান সময়ের বিজ্ঞানীরা বলছেন। এই পথেই হাঁটছেন। আমি সচেতন থাকার চেষ্টা করি। তারপরও অনেক সময় বেরোতে হয়। আর দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাচ্ছে।’
সানী বলেন, ‘হেক্সিসল বা মাস্ক কিনতে গিয়ে দেখলাম দাম বেড়ে গেছে। এয়ারপোর্ট তো মোটেও নিরাপদ না। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের একটা জায়গায় রাখা উচিত। আমাদের নিজেদেরও দায়বদ্ধতাও আছে। একটু চিন্তা করে দেখবেন, আমাদের দেশে এই মহামারি হলে কে আমার বা আপনার জানাজা করবে, দাফন করবে? আমরা একটু সচেতন হব। যে যার জায়গা থেকে জনসমাগম থেকে দূরে থাকব। জুমার নামাজ পড়ার জন্য আমি মসজিদে গিয়েছিলাম। অনেকে নিষেধ করেছে। তবে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করবেন বলে মনে করি। তাই নামাজে যাওয়া। তবে শিল্পীদের অনুরোধ করব, জনসমাগম এলাকায় যেন না যাই আমরা। সচেতন আমাদের সবার হতে হবে। আর সবার জন্য দোয়া রইল।’