বলিউড অভিনেত্রী ও বিউটি কুইন সুস্মিতা সেন তাঁর ‘মিস ইউনিভার্স’ খেতাব জেতার ২৬ বছর উদযাপন করেছেন গত সপ্তাহে। প্রথম ভারতীয় হিসেবে ১৯৯৪ সালে তিনি এই মুকুট পরেন। কিন্তু আপনি কি জানেন, তিনি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ হারাতে বসেছিলেন? সুস্মিতার বদলে সংগঠকরা ঐশ্বরিয়াকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন?

গত বছর সাংবাদিক রাজিব মাসান্দকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সুস্মিতা জানান, ভারত ছেড়ে যাওয়ার আগে তিনি পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেন। এখানেই ঘটে বিপত্তি।

সুস্মিতা বলেন, “এটি তখনকার বিখ্যাত মডেল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কো-অর্ডিনেটর অনুপমা ভার্মাকে দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশে একটি অনুষ্ঠানের জন্য তাঁর কাছে আমার পাসপোর্ট ছিল। আইডি যাচাইয়ের জন্য এটি তাঁর দরকার পড়েছিল। সুতরাং আমি বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মিস ইন্ডিয়াকে বলি, ‘চিন্তা করবেন না, আমার পাসপোর্ট অনুপম ভার্মার কাছে বেশ নিরাপদে আছে।’ তিনি এটি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তাই তিনি এর দায়িত্ব নিয়েছেন এবং বলেছেন, ‘আমি জানি না আমি কী করেছি’। কিন্তু ওই সময় ব্যাপারটা বেশ ভীতিকর ছিল।” হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এর পরই আসে বড় চমক। মিস ইন্ডিয়ার আয়োজকেরা সুস্মিতার পরিবর্তে ঐশ্বরিয়া রাইয়ের নাম প্রস্তাব করতে থাকেন। এমন প্রস্তাব সুস্মিতাকে বেশ রাগান্বিত করে তোলে।

“কারণ, যখন আপনি কাউকে অনুরোধ না করে, সঠিকভাবে কিছু জিতবেন... সুতরাং আমাদের যৌথভাবে কাজ করতে হবে এবং সঠিক কাজটি নিশ্চিত করতে হবে। এটি বলা খুব সহজ যে, ‘হ্যাঁ, এখন আমরা তা খুঁজে বের করতে পারব। পাসপোর্ট হারিয়ে গিয়েছিল। মিস ওয়ার্ল্ড নভেম্বরে। তুমি পরে এসো, তত দিনে আমরা তোমার পাসপোর্ট খুঁজে বের করব।’”

এরপর সুস্মিতা এই ব্যাপারে তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁকে জানান, মিস ইউনিভার্স ছাড়া তিনি আর কোনো প্রতিযোগিতায় যাবেন না। ‘আমি কেবল আমার বাবার সামনে কাঁদছিলাম, বলছিলাম, আমি অন্য কোনো কিছুর জন্য রাজি হব না। আমি এটা পাওয়ার যোগ্য। আমি যদি না যাই, তাহলে অন্য কেউ এর জন্য যেতে পারে না,’ বলেন সুস্মিতা।

সুস্মিতার বাবা তৎকালীন ইউনিয়ন মন্ত্রী রাজেশ পাইলটের কাছ থেকে সাহায্য পেলে বিষয়টির সমাধান হয়। তিনি জানান, সুস্মিতা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করায় তাঁকে সব ধরনের সাহায্য করা হবে।

রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঐশ্বরিয়া রাই ওই বছর মিস ইন্ডিয়ার রানারআপ হয়েছিলেন। সুস্মিতা পাসপোর্ট হারানোর পর মিস ইন্ডিয়ার আয়োজকরা ঐশ্বরিয়ার নাম প্রস্তাব করেছিলেন।

নিয়ম অনুযায়ী, যিনি মিস ইন্ডিয়া জিতবেন, তিনি মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করবেন। আর যিনি রানারআপ হবেন, তিনি মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করবেন। সুস্মিতা সেন মিস ইন্ডিয়া জিতেছিলেন এবং ঐশ্বরিয়া রাই রানারআপ হয়েছিলেন।

তবে সেসব এখন ইতিহাস। ঐশ্বরিয়া রাই ও সুস্মিতা সেন দুজনই যথাক্রমে মিস ওয়ার্ল্ড ও মিস ইউনিভার্স শিরোপার অধিকারী।