প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রেমিককে স্মরণ সঞ্জয়কন্যার
ভালোবাসার মানুষকে চিরতরে হারিয়ে ফেলার যন্ত্রণা বেশ ভারী। কেউ কেউ তা প্রকাশ করেন, কারো গল্প রয়ে যায় অগোচরে। বলিউড তারকা সঞ্জয় দত্তের কন্যা ত্রিশালা দত্ত গত বছরের জুলাইয়ে প্রেমিককে হারান চিরতরে। প্রয়াত প্রিয়তমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ত্রিশালা একটি মর্মস্পর্শী নোট শেয়ার করেছেন। প্রেমিকের মৃত্যুর পর নিজেকে কীভাবে সামলেছেন, সেসবও উঠে এসেছে ওই নোটে।
ভারতের বিনোদনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বলিউড বাবলের প্রতিবেদনে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে করা পোস্টে প্রয়াত প্রেমিকের সঙ্গে তোলা একটি পুরোনো ছবি শেয়ার করেন ত্রিশালা। কীভাবে তিনি থেরাপির জন্য গিয়েছিলেন, সেটিও উঠে এসেছে পোস্টে।
ত্রিশালা জানান, আট বছর বয়সে মায়ের মৃত্যুর পর প্রিয়তমকে হারানোর জন্য তিনি একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না। ‘গত এক বছর ধরে আমার পায়ের নিচের মাটি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে এবং আমার জীবন বদলে গেছে। গত এক বছর আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে কিছুটা দূরে ছিলাম। আট বছর বয়সে মাকে হারানো এবং দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে এই শোক বয়ে বেড়ালেও সুন্দর হৃদয়ের প্রিয়তমকে হারানোর জন্য আমি নিজেকে প্রস্তুত করতে পারিনি। আপনাকে অন্ধকার মুহূর্তগুলোর মুখোমুখি হতে হবে এবং আপনার সারা জীবন অনুভূতির রোলারকোস্টারকে চালিয়ে যেতে হবে,’ লেখেন তিনি।
কীভাবে তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন এবং গত এক বছরে কতটা ওজন বেড়েছে, সে সম্পর্কে ত্রিশালা লেখেন, ‘আমাকে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়েছিল, কারণ আমার নিজের কোনো বিপর্যয় হলে আমি কীভাবে কারো মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে পারি? আমার বেশ কয়েকটি পাবলিক ব্রেকডাউন হয়েছে, যেখানে অপরিচিত ব্যক্তিরা আমার কাছে এসেছিলেন এবং আমার কোনো সহায়তার দরকার আছে কি না তা জানতে চেয়েছিলেন। আমি সবকিছুই খেয়েছি এবং ৩০ পাউন্ড (১৩ কেজি) ওজন বাড়িয়েছি।’
সেরে উঠতে সহায়তা করার জন্য ত্রিশালা তাঁর চিকিৎসক, বন্ধু ও সহায়তাকারী গ্রুপগুলোকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। ‘আমি আমার মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি শেয়ার করতে পেরে খুশি। শারীরিক দিক থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে। একজন দারুণ থেরাপিস্ট, সমর্থনকারী গ্রুপ ও তিনজন দুর্দান্ত বন্ধুর কারণে এটি সম্ভব হয়েছে, তা স্বীকার করতে আমি কুণ্ঠিত নই। আমার স্মৃতিগুলো কেবল তার কাছে রেখে এসেছি এবং আমি কখনোই তাকে ভুলতে পারি না। আমি তাকে ছাড়া আধো হৃদয়, এর পরেও আমি এখনো আছি এবং সর্বদা আমার মনে হয়েছে যে পুরো পৃথিবীর ভাগ্যবান মেয়েটি তার ছিল… ৭ অক্টোবর ১৯৮৬ থেকে ২ জুলাই ২০১৯,’ উপসংহারে লেখেন ত্রিশালা।
গত বছরের ২ জুলাই হঠাৎ করেই মারা যান ত্রিশালার ইতালীয় প্রেমিক। তবে প্রয়াত প্রেমিকের নাম কখনো প্রকাশ্যে আনেননি তিনি।
সঞ্জয় দত্ত ও তাঁর প্রথম স্ত্রী রিচা শর্মার মেয়ে ত্রিশালা দত্ত। মেয়ের জন্মের পর ১৯৯৬ সালে মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় রিচা শর্মার। মায়ের মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্রে দাদা-দাদির কাছে বড় হন ত্রিশালা।