দুস্থ ও অসচ্ছল গ্রামবাসীর পাশে শিরিন শিলা
রুপালি পর্দায় আসার আগে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘হিটম্যান’ ছবির মাধ্যমে ২০১৪ সালের ঈদে চলচ্চিত্রযাত্রা শুরু করেন। কাজ করেছেন বিজ্ঞাপন ও মিউজিক ভিডিওতে। বিভিন্ন স্টেজ শোতেও দেখা মেলে তাঁর। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের তারাবোতে তাঁর বেড়ে ওঠা। বলছি চিত্রনায়িকা শিরিন শিলার কথা।
শত ব্যস্ততার মধ্যে একটু ফুরসত পেলে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যান শিরিন শিলা। করোনার এই সময়ও গ্রামের অসচ্ছল মানুষের পাশে দাঁড়াতে ভোলেননি তিনি। গতকাল গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ২৫০ জন অসচ্ছল মানুষের মধ্যে বিতরণ করেছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। ঈদ উপলক্ষে দিয়েছেন পোলাওয়ের চাল, সেমাই, চিনি।
এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় দুস্থ মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণ করতে দেখা যায় তাঁকে। দায়বদ্ধতা থেকে ইফতার বিতরণ করেছেন। গ্রামের মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়েছেন নাড়ির টানে। এনটিভি অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন শিরিন শিলা।
শিরিন শিলা বলেন, ‘আমি বড় হয়েছি রূপগঞ্জের তারাবোতে। গ্রামের মানুষ আমাকে অনেক ভালোবাসে, আমিও অনেক ভালোবাসি তাদের। সময় পেলেই সেখানে ছুটে যাই। আনন্দের সঙ্গে সবাইকে নিয়ে সময় কাটাই। করোনার সময়ও আমি সবার পাশে থাকতে চেয়েছি। নিজের সাধ্যমতো ২৫০ পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছি।’
শিলা আরো বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় অনেকের বাসায় গিয়ে সেমাই খেয়েছি। করোনার এই সময় কারো কোনো কাজ নেই। তাই ঈদে সেমাই কিনে খাওয়ার সামর্থ্যও হারিয়েছেন অনেকে। বিষয়টি মাথায় রেখে আমি সবাইকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর পাশাপাশি পোলাওয়ের চাল, সেমাই, চিনি দিয়েছি। তাদের মুখের হাসি আমাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে। তবে বাড়ি থেকে ফেরার সময় অনেক করুণ মুখও দেখেছি, তখন খারাপ লেগেছে। আমার যদি সামর্থ্য থাকত, তবে সবার পাশে দাঁড়াতে পারতাম।’
ইফতার বিতরণ প্রসঙ্গে শিলা বলেন, ‘১৯ রোজার দিকে বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাসার নিচে একজনকে দেখতে পাই। তাঁকে দেখে মায়া হয়। দারোয়ানকে দিয়ে তার জন্য ইফতার পাঠাই। পরে দারোয়ানের কাছে জানতে পারি, লোকটা দুদিন ধরে না খেতে পেয়ে এমন পাগলের মতো দেখতে হয়েছে। দেখে অনেক খারাপ লেগেছে। ২০ ও ২১ রোজায় রাস্তায় ইফতার বিতরণ করেছি। দুদিনে মোট ৫০০ লোককে ইফতার দিয়েছি। আসলে আমার সামর্থ্য কম, তাই এর চেয়ে বেশি কিছু করতে পারিনি।’
এফডিসিতে অনেক মানুষ সমস্যায় আছে, তাদের জন্য কী করেছেন—জানতে চাইলে শিলা বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, আমার সামর্থ্য কম। তাই এফডিসিতে তেমন কিছু করতে পারিনি। তবে দু-তিনটি সমিতি থেকে আমাকে ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল, তাদের কিছু সাহায্য করেছি। সেটা উল্লেখ করার মতো কিছু নয়। আমি সমাজের উচ্চবিত্তদের অনুরোধ করব, আমাদের আশপাশে অনেক মানুষ সমস্যায় আছে, দয়া করে তাদের পাশে দাঁড়ান।’