ইলিয়াস কাঞ্চনের পক্ষে চলচ্চিত্রকর্মীরা
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকরা ‘নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮’ আইনটি তৈরির পেছনে ভূমিকা রাখার জন্য চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে ‘দায়ী’ করে তাঁর বিচারও দাবি করেছে। বিভিন্ন স্থানেই ঢাকাই চলচ্চিত্রের এই নায়কের ছবি ও ব্যানারও টানিয়ে সড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্রশিল্পীরা।
এ বিষয়ে অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল বলেন, ‘ইলিয়াস কাঞ্চন নিরাপদ সড়ক চেয়েছে। এটা তাঁর অপরাধ হতে পারে না। যারা তাঁর ছবি পোড়াচ্ছে, তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে, তারা অন্যায় করছে। আমি আইনটির পক্ষে বা বিপক্ষে কথা বলছি না। শুধু বলতে চাই, ইলিয়াস কাঞ্চন যা করছে, তা আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের দাবি। আমরা সবাই দিন শেষে সুস্থ দেহে বাসায় ফিরতে চাই।’
প্রযোজক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম বলেন, “ইলিয়াস কাঞ্চন আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গনের প্রিয় একজন মানুষ। তিনি ‘নিরাপদ সড়ক’ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। কতিপয় শ্রমিক কর্তৃক তাঁর এই অবমাননার তীব্র প্রতিবাদ, নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।”
নায়ক রুবেল বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তবে নিরাপদ সড়ক শুধু তাঁর নয়, এটা আমাদের সবার দাবি। এই কাজটি করে দেশব্যাপী প্রশংসাও পাচ্ছেন তিনি। তাঁকে নিয়ে যেসব মানুষ পোস্টার তৈরি করেছে, তারা নোংরা মনের পরিচয় দিয়েছে। আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ করছি।’
জায়েদ খান বলেন, ‘আমরা কাঞ্চন ভাইয়ের পাশে আছি। তিনি যেভাবে চাইবেন, আমরা তাঁর সঙ্গে আছি। যারা নোংরামি করছে, তারা দেশের ও সমাজের শত্রু। শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। কাঞ্চন ভাই দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে সচেতন করে আসছেন, এটা আমাদের গর্বের বিষয়। তাঁর এই সুন্দর কাজের সঙ্গে শিল্পীরা থাকবেন এবং শিল্পী সমিতি আছে।’
বাংলাদেশের একসময়ের জনপ্রিয় নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’-এর প্রধান। ১৯৯৩ সালে মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রিয়তম স্ত্রী জাহানারা কাঞ্চনকে হারানোর পর থেকেই দুর্ঘটনামুক্ত ও নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করতে দেশের একপ্রাপ্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটে বেরিয়েছেন। এর পরই বাংলাদেশের সড়কে ফোরলেন, সড়কে ডিভাইডার তৈরি, মহাসড়ক থেকে নছিমন-করিমন উঠিয়ে নেওয়া, প্রতিবছর নিরাপদ সড়ক দিবস পালন করা হচ্ছে।