শর্মিলী আহমেদ যখন মঞ্চে তখন রাজশাহীতে কোনো মেয়ে অভিনয় শুরু করেনি
প্রখ্যাত টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদের অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়েছিল বাবা মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মল্লিকের হাত ধরে। তিনি ছিলেন উত্তরবঙ্গের নামকরা নাট্যাভিনেতা, নাট্যশিক্ষক, নাট্য পরিচালক।
পঞ্চাশের দশকে একটি মেয়ে কিভাবে অভিনয়ে এলো সেই গল্প ২০১৭ সালের এক সাক্ষাৎকারে শর্মিলী আহমেদ জানিয়েছিলেন, “সেই সময় বাবার দলের নাম ছিল ‘ঘোড়ামারা ড্রামাটিক ক্লাব’। আমাদের বৈঠকখানায় সেই নাটকের রিহার্সাল হতো। বিকেল থেকে তাঁরা মহড়া শুরু করতেন। বাইরে খেলে এসে রিহার্সালের আওয়াজ পেলেই ঢুকে এককোণে চুপচাপ বসে মহড়া দেখতাম, খুব ভালো লাগত। প্রথম মঞ্চে উঠেছিলাম চার বছর বয়সে। তখনো রাজশাহীতে কোনো মেয়ে অভিনয় শুরু করেনি। ছেলেরাই মেয়ে সাজত। মেয়ে শিশুশিল্পী কোথায় পাবে? বন্ধুরা বললেন, ‘কেন, ওই তো লিলি, ও করুক।’ আব্বা বললেন, ‘ও কি পারবে? এত ছোট?’ মঞ্চাভিনয় কী, কিভাবে করতে হয়, কোনো কিছু না বুঝে খুশির চোটে বলে দিলাম ‘পারব’।”
শর্মিলী আহমেদের ১৯৪৭ সালের ৮ মে মুর্শিদাবাদের বেলুর চাক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী পিএন গার্লস হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষা পাস করেন। অভিনয়কে পেশা হিসেবে শুরু করেন ১৯৬৪ সালে। তারও আগে ১৯৬২ সালে রেডিওতে এবং ১৯৬৪ সালে চলচ্চিত্রে তার ক্যারিয়ার শুরু করেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘দম্পতি’তে কাজ করেছেন।
১৯৭৬ সালে মোহাম্মদ মহসিন পরিচালিত ‘আগুন’ নাটকে প্রথমবারের মতো মায়ের ভূমিকা পালন করেছিলেন। মূলত এরপর থেকে নাটক ও সিনেমায় শর্মিলী আহমেদ হয়ে ওঠেন তারকাদের অলিখিত মা।
প্রখ্যাত টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদ (৭৫) আজ শুক্রবার ভোরে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।