নিজ গ্রামের অসচ্ছল মানুষের পাশে সনি ও তাঁর মা
নরসিংদীর মনোহরদিতে তাঁর বেড়ে ওঠা। ২০০৫ সাল থেকে কাজ করছেন ছোটপর্দায়। সম্প্রতি সনি রহমান যুক্ত হয়েছেন চলচ্চিত্রে। ‘তোলপাড়’ চলচ্চিত্র দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক হচ্ছে তাঁর। সনির মা শামীমা আফ্রাদ, নরসিংদীর মনোহরদীতে স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। মা ও ছেলে মিলে তাঁদের গ্রামের ৩৫০ পরিবারের পাঁশে দাঁড়িয়েছেন। গ্রামের অসচ্ছল মানুষগুলোর বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।
এ বিষয়ে সনি রহমান বলেন, ‘নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চিন্তা থেকে গতকাল বাড়ি এসেছি। আসার সময় কারওয়ানবাজার থেকে কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে এনেছিলাম। এখানে এসে দেখি, মাও তাঁর নিজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে প্যাকেট করছেন। মনটা ভরে গেল। মা আর আমি মিলে গ্রামের অসচ্ছল পরিবারের তালিকা করলাম। সেখানে ৩৫০টি পরিবার রয়েছে, যাদের এ সময়ে সাহায্য প্রয়োজন। আজ সকাল থেকে তালিকা অনুযায়ী বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছি এসব সামগ্রী।’
সনি আরো বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম ঢাকায় কিছু করা যায় কি না। তবে ছোটবেলা থেকে চোখের সামনে দেখা অসচ্ছল মানুষের মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠল। তা ছাড়া ঢাকায় অনেকেই আছে, যারা ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। কে, কাকে, কী দিচ্ছে, সে তা নিজেও জানে না। আর গ্রামের এসব মানুষের কার কী অবস্থা, তা আমরা গ্রামের সবাই জানি। যে কারণে কাকে, কী দিচ্ছি, সেটা আমরা জানি।’
সনি বলেন, ‘আমরা ৩৫০টি পরিবারের তালিকা করেছি। কোনো পরিবারে দুজন, আবার কোনো পরিবারে পাঁচ-ছয়জন। পরিবারে কতজন সদস্য আছে, সে হিসাব করে আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করছি। কোন পরিবারকে কতদিনের জন্য সাহায্য করতে পেরেছি, তার হিসাব রাখছি। যেন পরবর্তী সময়ে আবারও পাশে দাঁড়াতে পারি।’
বাবাকে স্মরণ করে সনি বলেন, ‘বাবা আবদুছ ছাত্তার মোড়ল পেশায় ছিলেন স্কুল শিক্ষক। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষের সেবা করে গেছেন। আমি ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখে এসেছি, কেউ অসুস্থ হলে, বা কারো বিপদ হলে, রাত নেই, দিন নেই, তিনি মানুষের বিপদে ছুটে যেতেন। আর বাবার এ মহৎ কাজের ফলে দেখেছি বাবার মৃত্যুর পর সাধারণ গরিব-অসহায় মানুষের কান্না। সুতরাং আমি বাবার আদর্শের কথাই মাথায় নিয়ে চলি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমার বাবার মতো মাকেও পেয়েছি, যিনি মানুষের জন্য কিছু করতে চান। আমাদের সামর্থ্য কম। আমাদের গ্রামে অনেকেই আছে, যারা বিত্তবান। আপনারাও যদি পাশে দাঁড়ান, আমাদের গ্রামের মানুষগুলো অন্তত এ অসময়টা পাড়ি দিতে পারবে।’