জাফর ইকবাল : গায়ক থেকে সুপারস্টার নায়ক
আশির দশকের ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক জাফর ইকবাল ক্যারিয়ারের শুরুতে গায়ক ছিলেন। ‘সুখে থাকো নন্দিনী’ শিরোনামে গান গেয়ে সাড়া ফেলেছিলেন। তবে গানের চেয়ে সিনেমার পর্দায় সবচেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছেন জাফর ইকবাল।
আজ গায়ক-নায়ক জাফর ইকবালের জন্মদিন। ১৯৫০ সালের আজকের দিনে (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফ্যাশন-সচেতন এই অভিনেতা।
জাফর ইকবাল তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন গায়ক হিসেবে। ১৯৬৬ সালে বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ব্যান্ডদল ‘রোলিং স্টোন’। নায়করাজ রাজ্জাক অভিনীত ‘বদনাম’ সিনেমায় প্রথম প্লেব্যাক করেছিলেন আনোয়ার পারভেজের সুরে ‘হয় যদি বদনাম হোক আরো/ আমি তো এখন আর নই কারো’ গানে। সে সময় গানটি সাড়া ফেলেছিল। এর পর থেকে নিয়মিত প্লেব্যাক করেছেন সিনেমায়। ভালো গিটার বাজাতেন বলে সুরকার আলাউদ্দিন আলী তাঁকে দিয়ে অনেক সিনেমার আবহসংগীত তৈরি করিয়েছেন। জাফর ইকবাল ‘কেন তুমি কাঁদালে’ শিরোনামে একটি অডিও অ্যালবামও প্রকাশ করেছিলেন আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে। তাঁর জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী, হয়ে কারো ঘরনি’, ‘তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন’, ‘হয় যদি বদনাম হোক আরো’ অন্যতম।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন জাফর ইকবাল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের আগে জাফর ইকবাল সিনেমার জগতে পা রাখেন। তাঁর অভিনীত প্রথম সিনেমার নাম ‘আপন পর’। তবে সত্তর দশকের মাঝামাঝি থেকে চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন জাফর ইকবাল। ১৯৭৫ সালে ‘মাস্তান’ সিনেমার সফলতা তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সব মিলিয়ে জাফর ইকবাল ১৫০টি সিনেমায় অভিনয় করেন, যার বেশির ভাগই ছিল ব্যবসাসফল। তাঁর অভিনীত সুপারহিট সিনেমার তালিকায় আছে ‘ভাই বন্ধু’, ‘চোরের বউ’, ‘অবদান’, ‘সাধারণ মেয়ে’, ‘একই অঙ্গে এত রূপ’, ‘ফকির মজনুশাহ’, ‘দিনের পর দিন’, ‘বেদ্বীন’, ‘অংশীদার’, ‘মেঘবিজলী বাদল’, ‘সাত রাজার ধন’, ‘আশীর্বাদ’, ‘অপমান’, ‘এক মুঠো ভাত’, ‘নয়নের আলো’, ‘গৃহলক্ষ্মী’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘প্রেমিক’, ‘নবাব’, ‘প্রতিরোধ’, ‘ফুলের মালা’, ‘সিআইডি’, ‘মর্যাদা’, ‘সন্ধি’ প্রভৃতি।
১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি ক্যানসার, হার্ট ও কিডনির সমস্যায় মাত্র ৪০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বাংলা সিনেমার স্টাইলিশ এ নায়ক।