চীনা প্রতিষ্ঠান স্পন্সর, তাই পুরস্কার নিলেন না জিৎ
ভারত ও চীনের মধ্যকার সংঘাত-উত্তেজনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে বেশ কিছু দিন ধরেই। সীমান্ত ছাড়িয়ে আর সীমানা পেরিয়ে সেই ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতের চলচ্চিত্র অঙ্গনেও। এরই মধ্যে পশ্চিম লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় সাম্প্রতিক চীন-ভারত সেনাদের সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের ঘোষণা এসেছে। বলিউড সুপারস্টার অজয় দেবগন এটি প্রযোজনা করবেন।
পিছিয়ে নেই টলিউডও। ভারতীয় বাংলা ছবির জনপ্রিয় অভিনেতা জিৎ এবার একটি সম্মাননা পুরস্কার নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আর এর নেপথ্যের কারণ যে ওই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্পন্সর হিসেবে চীনা প্রতিষ্ঠানের থাকা, তা জানিয়েছেন জিৎ নিজেই।
ভারতীয় দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনা অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অভিনেত্রী সাংসদ নুসরাত জাহান। পাশাপাশি তৃণমূলের যুবশক্তির রাজ্য কো-অর্ডিনেটর ও অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীরও মন্তব্য ছিল, ‘অ্যাপ ব্যান করলে তো আর শহীদেরা ফিরে আসবেন না।’
তবে এই দুই তারকার বিপরীতমুখী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুপারস্টার জিৎ। সংস্থার নাম উল্লেখ না করেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের কথা জানিয়েছেন অভিনেতা। সম্প্রতি একটি সংস্থা চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদানের জন্য ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সেখানেই দর্শকের বিচারে সেরা অভিনেতার শিরোপা জিতেছিলেন জিৎ। স্বাভাবিকভাবেই অনুষ্ঠানের দিন এটি ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলেছে অভিনেতাকে। সম্প্রতি লাদাখে চীনের হামলায় মারা যান ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। আর সেটি বিবেচনায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে জিৎ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট সংস্থার দেওয়া পুরস্কার তিনি গ্রহণ করতে পারবেন না।
‘যে সমস্ত দর্শক আমাকে ভোট দিয়েছেন, যাঁরা আমাকে ভালোবাসেন, তাঁদের অসংখ্য ধন্যবাদ। পুরস্কার পেতে কার না ভালো লাগে বলুন! পরিবারের সদস্যরা, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবাই খুশিও হয়। বিশেষ করে বাড়ির বাচ্চারা ট্রফি দেখলেই আনন্দ পায়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার দেওয়া পুরস্কার গ্রহণ করতে কিছুতেই আমার মন সায় দিচ্ছে না,’ বলেন জিৎ।
আপত্তিটার কারণ জানাতেও দ্বিধা রাখেননি তিনি। জিৎ বলেন, ‘অনেকেই হয়তো জানেন না যে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের সঙ্গে একটি চীনা কোম্পানি যুক্ত রয়েছে। আমার ব্যক্তিগতভাবে কারো সঙ্গে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের দেশের সঙ্গে চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভালো নয়। চীনের আগ্রাসী মনোভাবের জন্যই শহীদ হতে হয়েছে আমাদের দেশের জওয়ানদের। আর এমতাবস্থায় কোনোমতেই আমি এই পুরস্কার নিতে পারব না। সীমান্তে গিয়ে লড়াই না করতে পারলেও নিজের দেশের জন্য তো এটুকু করাই যায়। তাই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলাম।’