এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চয়নিকার আনন্দ-বেদনা
‘সময়ের সাথে আগামীর পথে’ স্লোগান নিয়ে এনটিভির জন্ম। আর এই আগামীর পথে চলতে চলতে সাফল্যের সঙ্গে ১৭ বছর পার করল বেসরকারি এই স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল। আজ ৩ জুলাই ১৮ বছরে পা রাখল এনটিভি।
এনটিভির এই বিশেষ দিনটি চয়নিকা চৌধুরীর জন্যও বিশেষ। কারণ, আজ রাত সাড়ে ৯টায় তাঁর নির্মিত নাটক ‘গল্প নয়’ প্রচারিত হবে এনটিভিতে। আর এর মধ্য দিয়ে ৪০০ নাটক নির্মাণ পূর্ণ করলেন তিনি। তবে এই আনন্দের সঙ্গে বেদনাও জড়িয়ে আছে।
বিশেষ দিনটি স্মরণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন চয়নিকা চৌধুরী। এনটিভির জন্মদিন, তাঁর ৪০০তম নাটক; তবে এমন দিনে নেই তাঁর শিক্ষকতুল্য প্রয়াত এনটিভির অনুষ্ঠানপ্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ। বিশেষ এই নাটকটি তাঁকে উৎসর্গ করলেন নির্মাতা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে এনটিভি অনলাইনকে চয়নিকা চৌধুরী বলেন, ‘আজ এনটিভির জন্মদিনে আমার ৪০০তম নাটক প্রচার হচ্ছে, এই দিনটি আমার জন্য অনেক আনন্দের হতে পারত। যদি না আমার শিক্ষকতুল্য গুরুজন এনটিভির অনুষ্ঠানপ্রধান মোস্তফা কামাল সৈয়দ ভাই চলে না যেতেন। তিনি নেই, এই কথাটি আজ সকাল থেকেই বারবার মনে হচ্ছে আর বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠছে। আমি এই বিশেষ দিনের বিশেষ নাটকটি আমার প্রয়াত গুরুজনকে উৎসর্গ করলাম। আপনারাও সবাই উনার জন্য দোয়া করবেন।’
এনটিভির প্রতি প্রত্যাশা রেখে চয়নিকা বলেন, ‘কামাল ভাই চলে গেছেন, তবে তিনি রেখে গেছেন দেশের শক্তিশালী অনুষ্ঠান বিভাগ। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করছেন আলফ্রেড খোকন, পাভেল ইসলাম, জাহাঙ্গীর চৌধুরী ভাইয়ের মতো মেধাবী মানুষগুলো। জন্মদিনে বিশেষ নাটক নির্মাণ করতে দেওয়ার জন্য আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার বিশ্বাস, এই টিম এনটিভির মান আরো উন্নত করতে ভূমিকা রাখবে। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই এনটিভির সেলস ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান অঞ্জন কুমার কুণ্ডুকে, তিনি অনেক সহযোগিতা করেন সব সময়।’
‘গল্প নয়’ নাটকের শিল্পী-কলাকুশলীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে চয়নিকা বলেন, ‘আমি এই নাটক নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক বেশি কৃতজ্ঞ আবুল হায়াত, শিরী হায়াত, শিহাব শাহীন ও মিলি বাশারের প্রতি। তাঁরা এই করোনার সময় বিশ্বাস করে নিজেদের বাসায় শুটিং করার অনুমতি দিয়েছেন। মিলন, ইরফান, মমর প্রতি কৃতজ্ঞতা। করোনার এই সময়ে আমাকে কাজ সহযোগিতা করার জন্য। আমি কৃতজ্ঞ এই নাটকের প্রযোজক কাজী রিটন ভাইয়ের কাছে। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি এই নাটক নির্মাণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।’
চয়নিকা চৌধুরী আরো বলেন, ‘৪০০তম নাটক নির্মাণ করতে পেরেছি। এই দীর্ঘ পথচলায় যাঁরা নেপথ্যে থেকে আলো জ্বালিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার বিশেষ কৃতজ্ঞতা। লাইট, ক্যামেরা, মেকআপ, প্রডাকশন বয়, শুটিং ফ্লোরের মালিকসহ যাঁরা আমাদের এত দিন সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি আমি অনেক বেশি কৃতজ্ঞ। আমি সাংবাদিক ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞ, তাঁরা আমার কাজ নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা করেছেন, দর্শকের কাছে খবরটি পৌঁছে দিয়েছেন। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন সুস্থ থেকে কাজ করে যেতে পারি। এনটিভির জন্য দোয়া করবেন, যেন দেশ ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।’
ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট প্রযোজিত নাটকটি রচনা করেছেন যৌথভাবে ফারিয়া হোসেন ও চয়নিকা চৌধুরী। এতে অভিনয় করেছেন আবুল হায়াত, আনিসুর রহমান মিলন, জাকিয়া বারী মম, ইরফান সাজ্জাদ, মিলি বাশার ও মাসুম বাশার। গানের কথা লিখেছেন অরুণ চৌধুরী। সুর, কম্পোজ কণ্ঠ তানভীর তারেকের। পরিচালনা চয়নিকা চৌধুরী। প্রযোজনা করেছেন কাজী রিটন।
মুক্তির অপেক্ষায় চয়নিকা চৌধুরী পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘বিশ্ব সুন্দরী’। যদিও তিনি নাট্যনির্মাতা হিসেবে অধিক জনপ্রিয়।