কুয়েটে প্রায় পাঁচ মাস শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ, অভিভাবকদের মানববন্ধন আজ

প্রায় পাঁচ মাস বন্ধ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সকল একাডেমিক কার্যক্রম। পরীক্ষা দিতে বা ক্লাসে ফিরতে না পেরে উদ্বিগ্ন এবং হতাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। তারা যে কোনো মূল্যে ক্লাসে ফিরতে চান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আজ রোববার (২০ জুন) থেকে শিক্ষার্থীরা স্বপ্রণোদিত হয়ে আবাসিক হলে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। নতুন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা তিন মাস পার হলেও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি।
inside Kuet নামে ফেসবুক আইডিতে শনিবার (১৯ জুলাই) পোস্ট দেওয়া হয় ‘দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাসের পর LE, CHE ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকরা ক্লাস শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন। রোববার থেকেই ক্লাস হচ্ছে। অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকবৃন্দ ক্লাস শুরুর ব্যাপারে আন্তরিক।’
কুয়েট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘রক্তাক্ত কুয়েট’ফেসবুক পেজে শনিবার (১৯ জুলাই) ক্লাসে চলো পোস্ট দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টে বলা হয়েছে, ‘সকল জরাজীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে নেতিবাচকতাকে রেড কার্ড দেখিয়ে আমরা রোববার (২০ জুলাই) হতে ক্লাস ফেরত যাই। আমাদের শিক্ষকরা সর্বদা আমাদের মঙ্গল কামনা করেছেন। উনারা আমাদের এ দুর্দিনে কোনভাবেই মুখ ফিরিয়ে নিতে পারবেন না। তাই আমাদের ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে ক্লাসের উদ্দেশ্যে যেতে হবে। ২১ ও ২২ ব্যাচের সকল শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হচ্ছে স্ব স্ব ডিপার্টমেন্টে ক্লাস রুটিন অনুযায়ী ক্লাসে ফেরত যাওয়ার জন্য।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আতাউর রহমান নামে একজন শিক্ষক তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে যেটা বুঝতে পারলাম কুয়েটের অধিকাংশ শিক্ষক দ্রুত ক্লাসে ফিরে সকল একাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে চান।’
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু ১৮ ফেব্রুয়ারির পর থেকে কুয়েটে জড়িতদের সুষ্ঠু বিচার, শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে একজন উপচার্যকে অব্যাহতি এবং শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে এক উপাচার্য পদত্যাগ করেন। কুয়েটে বর্তমানে উপাচার্য নেই।
এদিকে দীর্ঘ পাঁচ মাস ক্লাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন ও হতাশ। খুলনার স্থানীয় অভিভাবকরা আজ বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরুর দাবিতে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছেন।
এর আগে ১৯ জুলাই প্রতিষ্ঠানটির অচলাবস্থা নিরসন করে একাডেমিক কার্যক্রমসহ সব ধরনের কার্যক্রম সচল করে শিক্ষার্থীদের চরম ক্ষতি ও অভিভাবকদের হতাশমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুয়েটের গার্ডিয়ান ফোরাম ঢাকার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)’র চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।