‘আমি তোমাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি’
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন বুয়েটের উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘আমি তোমাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আশা করি তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দেবে। একই সাথে এ ঘটনায় সমবেদনা ও দুঃখ প্রকাশ করছি এবং পরিবারের কাছেও ক্ষমা চাচ্ছি।’
আজ শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় বুয়েটের মিলনায়তনে ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সভা শুরু হয়। সভায় আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
ভিসি বলেন, ‘আমি ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট তৎপর ছিলাম। তোমরা অভিযোগ করেছ আমি তোমাদের সামনে আসিনি। আমি মূলত এটা নিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী এবং পুলিশের আইজিসহ সরকারের উচ্চপদস্থদের সঙ্গে কথা বলেছি।’
অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘তোমরা আমার তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছ। আমি বলব আমি বসে ছিলাম না। এখানে সামান্য বিষয়টা নিয়ে মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং তৈরি হয়েছে। আমার জানামতে এমন ঘটনাই এর আগে এত দ্রুততম সময়ে সংশ্লিষ্ট গ্রেপ্তার হয়নি। কিন্তু এ ঘটনায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবরার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি এটা নিয়ে কাজ না করলে গ্রেপ্তার হলো কী করে?’
ভিসি বলেন, ‘একটা জীবন চলে গেলে সেটা ফিরে পাওয়া যায় না। এজন্য আমাদের এখানে কষ্ট পাওয়া ছাড়া আর কিছুই নেই। আমি কথা দিচ্ছি এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের অবস্থা অবশ্যই সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।’
ঘটনায় দায়ী ছাত্রদের প্রসঙ্গে ভিসি বলেন, ‘খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। সরকারের সর্বোচ্চ মহলে আমরা যোগাযোগ করেছি। প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ গোয়েন্দারা সংগ্রহ করেছে, সেখানে যে তথ্য পাবে সে অনুযায়ী শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। আমরা সেটি আশ্বস্ত হয়েছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সেটি নিশ্চিতে চেষ্টা করব।’
আবরারের পরিবার প্রসঙ্গে ভিসি বলেন, ‘বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য আবরারের পরিবারকে সকল খরচ দেওয়া হবে। আমরা এ দাবির সঙ্গে একমত। প্রক্রিয়া অনুযায়ী সেই খরচ দেওয়ার ব্যবস্থা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ প্রসঙ্গে ভিসি বলেন, ‘অবৈধভাবে হলে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের উচ্ছেদ করতে আজ রাত থেকে হলে হলে অভিযান চলবে। হলে হলে প্রভোস্ট ও শিক্ষকরা মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্লিনিং অপারেশন চালাবে। প্রয়োজনে পুলিশ পাঠানো হবে।’
এ সময় ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রত্যেক হলের প্রভোস্টদের সাথে পাঁচ থেকে ছয়জন শিক্ষক বসে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। সে অনুযায়ী হলে হলে ক্লিনিং অপারেশন চলবে। এবং সেটি আজ রাত থেকেই চলবে।’