‘যে রাজনীতি ছাত্রদের জন্য ক্ষতিকর, তার দরকার নেই’
ছাত্রলীগের নেতাদের মারধরে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তাঁর বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, যে রাজনীতি ছাত্রদের জন্য ক্ষতিকর সে রাজনীতি তো আমাদের দরকার নেই। রাজনীতি হওয়া দরকার ছাত্রদের কল্যাণে।
আজ বুধবার আবরার হত্যার বিচার দাবিতে এক মৌন মিছিল শেষে বক্তৃতায় শফিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মারধরে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ সকালে বুয়েট ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল করেছে আবরার ফাহাদের বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১০টার দিকে ‘তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল পরিবার’ ব্যানারে পলাশী থেকে মিছিল বের করে তারা। মিছিল শেষে বুয়েট ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেয় ওই শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সেখানে অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আবরার ফাহাদ হত্যার খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই। আমার জানা মতে, এই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটা কোনো ধরনের নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ পাইনি আমরা। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আগে থেকে সতর্ক হতে পারি কিংবা এসব ঘটনার বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারি।’
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা শিক্ষক ও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ চাই। কারণ আগে আমরা দেখতাম ছাত্রদল কিংবা ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা একই রুমে ঘুমাত। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি আপনারা জানেন। এই রাজনীতি কোনো শিক্ষার্থীর কল্যাণে আসে না। বরং ক্ষতি করে। তাহলে যে রাজনীতি ছাত্রদের জন্য ক্ষতিকর সে রাজনীতি তো আমাদের দরকার নেই। রাজনীতি হওয়া দরকার ছাত্রদের কল্যাণে।’
শিক্ষকদের রাজনীতি বন্ধ চান কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বুয়েটে সত্যিকার অর্থে ৯৯ ভাগ শিক্ষক রাজনীতি করেন না। তারা নিরপেক্ষ থাকেন। বুয়েটে রাজনীতি চলে না।’
রোববার রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে তাঁর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। গভীর রাতে হলের সিঁড়িতে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। ঘটনার পরের দিন সোমবার চকবাজার থানায় হত্যা মামলা করেন আবরার ফাহাদের বাবা। মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায়।
এদিকে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, সহ-সভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, উপ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপদপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, দুই সদস্য মুনতাসির আল জেমি ও এহতেশামুল রাব্বি তানিম এবং শামসুল আরেফিন রাফাত, মনিরুজ্জামান মনির ও মো. আকাশ হোসেন।