‘বিশ্ববিদ্যালয় শাস্তি দিত, ছাত্রলীগ কেন পিটিয়ে মারবে?’
ছাত্রলীগের পিটুনির পর নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের ফুফাতো ভাই ইফতেখার এনটিভি অনলাইনকে বলেছেন, ‘আমাদের পরিবার কেউ কোনো পলিটিকসের সঙ্গে জড়িত নয়। আর সে যদি শিবির করত, তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাস্তি দিত। ছাত্রলীগ কেন পিটিয়ে মারবে?’
আবরারের ফুফাতো বোন সানজিদা আক্তার বলেন, ‘আবরার ফাহাদ নিহতের খবর শুনে আমাদের পরিবারের অনেকে জ্ঞান হারিয়েছেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘আবরার নিয়মিত নামাজ পড়ত। কিন্তু সে কোনো সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নয়। আমাদের চৌদ্দগোষ্ঠী কোনো পলিটিকস করে না।’
তবে ছাত্রলীগ বলছে, আবরার ফাহাদের শিবির-সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে। আবরার ফাহাদের ফেসবুক ও মেসেঞ্জার চেক করে আবরারের শিবির-সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন বুয়েট ছাত্রলীগের সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু।
আবরার ফাহাদ ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র ছিলেন। আজ সোমবার ভোরে শেরেবাংলা হল থেকে উদ্ধার করা হয় ফাহাদের লাশ। তিনি শেরেবাংলা হলেই থাকতেন।
আবরারকে পেটানোর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও সহসভাপতি ফুয়াদকে আটক করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ) কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছি। এরই মধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। আমরা যতগুলো সিসিটিভির ফুটেজ আছে, সব সংগ্রহ করেছি। ফুটেজগুলো অত্যন্ত স্বচ্ছ।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনামতে, গতকাল রোববার রাতে শিবির সন্দেহে শেরেবাংলা হলেই আবরারকে জেরা করা হয় এবং পেটানো হয়। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক উপসম্পাদক ও সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র অমিত সাহা, উপদপ্তর সম্পাদক ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মুজতাবা রাফিদ, সমাজসেবা বিষয়ক উপ-সম্পাদক ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ইফতি মোশারফ ওরফে সকালসহ তৃতীয় বর্ষের আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী ছিলেন।
পরে ওই কক্ষে এসে দ্বিতীয় দফা আবরারকে পেটানো হয়। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়নসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। আজ সোমবার সকালে হলে তাঁদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।