পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি, ডাকসু নেতাদের শাস্তি দাবি সাদা দলের
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) আট নেতাসহ ৩৪ ছাত্রলীগ নেতাকে অনিয়মের মাধ্যমে ভর্তির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সমর্থক শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়। এর পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তদের স্বপদে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার দাবি জানায় সাদা দল।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনোপ্রকার বিজ্ঞপ্তি এবং ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি একটি চরম অনিয়ম এবং অমার্জনীয় অপরাধ। ঢাবিতে অনিয়মের মাধ্যমে ভর্তি সংক্রান্ত খবরে আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।
জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে এতে বলা হয়, এই অবৈধ ভর্তি প্রক্রিয়ায় জড়িতদের নৈতিক স্খলনের দায়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। তাঁদের জন্যই আজ ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের গর্বের স্থানটি পদদলিত হয়ে যাচ্ছে। এই ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে যে বা যাঁরাই জড়িত থাকুক না কেন, আমরা তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
প্রসঙ্গত, ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে ছাত্রলীগের ৩৪ জন সাবেক ও বর্তমান নেতা ছাত্রত্ব টিকিয়ে রাখতে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স বিভাগের মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি হন। ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই শুধু ওই কোর্সে ভর্তি হওয়া যাবে। তবে, ছাত্রলীগের আট নেতার কেউই পরীক্ষায় অংশ নেননি। নিয়ম বহির্ভূত উপায়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়সীমার পর ছাত্রলীগের এসব নেতা ভিসি ও ডিনের সুপারিশে ভর্তি হন।
অভিযুক্ত ডাকসুর নেতারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক মো. আরিফ ইবনে আলী, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভীর, সদস্য মো. রাকিবুল হাসান, নজরুল ইসলাম, মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান ও নিপু ইসলাম তন্বী।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভাষ্য : এ ব্যাপারে সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘উপাচার্য কোনো বিভাগ অথবা ইনস্টিটিউটে ভর্তির জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে কোনো ‘চিরকুট’ বা কোনো নির্দেশনা কখনো কাউকে দেননি, দেবার সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট নিয়মে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভর্তি করিয়েছে। তাই উপাচার্যকে ঘিরে অবান্তর, অসত্য, দায়িত্বহীন বক্তব্য ও তথ্য প্রচার না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হলো।’
আরো জানানো হয়, ‘সব সান্ধ্যকালীন অথবা প্রোফেশনাল একাডেমিক কার্যক্রম বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে।’