দুর্নীতির প্রতিবাদে জাবিতে মশাল মিছিল
‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে উপাচার্যের দুর্নীতি, উন্নয়নকাজে অপরিকল্পনা ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি মেয়েদের হল, প্রান্তিক গেইট, ভিসির বাসভবন সামনে দিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পরিবহন চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীদের ‘হল চাই হল হবে, প্রকৃতিও রক্ষা পাবে’, ‘এসো ভাই এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’, ‘চার হল একসাথে, ঘুম হবে কেমনে রাতে’, দুর্নীতিবাজের কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ছিঃ ছিঃ প্রশাসন টাকার জন্য মরণপণ’, ‘যেই ভিসি প্রতারণা করে সেই ভিসি চাই না’, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে আমরাই থাকব’, ‘যেই ভিসি দুর্নীতি করে সেই ভিসি চাই না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন হোক তা আমাদেরও দাবি। কিন্তু লুটপাট, দুর্নীতির যে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। জাহাঙ্গীরনগর সব সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। এবারও এই উন্নয়নের নামে লুটপাট ও অপরিকল্পিত মাস্টারপ্লান বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হলে জাহাঙ্গীরনগরের সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এর উচিত জবাব দেবে।’
সামাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সেক্রেটারি মো. দিদার বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হোক কিন্তু তা যেন একটি সঠিক মাস্টারপ্লানের ভিত্তিতে হয়। প্রকৃতি জাবির সৌন্দর্য, প্রকৃতি উজাড় করে উন্নয়নের নামে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে যত্রতত্র বহুতল ভবন করতে দেওয়া হবে না। উপাচার্যের দুর্নীতির জন্য যদি এই উন্নয়ন বাজেটের টাকা ফেরত যায় তাহলে এই উপাচার্যকে জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষার্থীরা তার উপযুক্ত জবাব দেবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান প্রশাসনকে তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম দেন। দাবি মেনে না নিলে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রশাসনিক ভবন অবরোধসহ ক্লাস বর্জনের হুঁশিয়ারি দেন।
‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এই ব্যানারে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করছে সাংস্কৃতিক জোট, বাম সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে শিক্ষকদের একাংশ। দাবিগুলো হলো ১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের পাশের তিনটা হল স্থানান্তর করে নতুন জায়গায় দ্রুত কাজ শুরু করতে হবে। ২. মেগাপ্রজেক্টের টাকার দুর্নীতির ব্যাপারে বিচার বিভাগীয় তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। টেন্ডারের শিডিউল ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নির্মাণ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। সব ব্যয়ের হিসাব জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। ৩. কাজ স্থগিত রেখে সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে মাস্টারপ্লান পুনর্বিন্যাস করে কাজ শুরু করতে হবে।