আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কাশ্মীরের বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সঞ্জীব চত্বরে আয়োজিত ‘আযাদীর জন্য সিনেমা’ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান তিনি। ‘জোনাকি গলির কারখানা’ নামক সাংস্কৃতিক সংগঠন এ সিনেমা প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এতে সংহতি প্রকাশ করে ডাকসুর ভিপিসহ লেখক, গবেষক ও বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।

এ সময় ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে বলা আছে, বাংলাদেশের মানুষ বা রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, বর্ণবাদ—এগুলোর বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত মানুষের পক্ষ অবলম্বন করেছে। সুতরাং সাংবিধানিক জায়গা থেকেও আমরা নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি।’

ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, ‘তারা যেন এর সুষ্ঠু সমাধান করে। সেইসঙ্গে বিশ্ব সম্প্রদায়কেও কাশ্মীরের বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানাব। কারণ, এখানে যেন বসনিয়া বা মিয়ানমারের মতো জাতিগত নিধনের চেষ্টা না করা হয়। সে জন্য বিশ্বসম্প্রদায়ের দায়িত্ব রয়েছে, এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন এবং ওয়াকিবহাল থাকার।’

এ সময় গবেষক ও কলামিস্ট আলতাফ পারভেজ বলেন, ‘বিশেষ সুবিধাসংবলিত ৩৭০ অনুচ্ছেদ দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে সেখানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কাশ্মীর, সিকিম ও ভুটান—এই অঞ্চলগুলোর অভিজ্ঞতা বলছে, বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার জন্য পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ফলে এই দেশগুলোর নিজেদের স্বার্থে কাশ্মীরের আজাদি সংগ্রামের সঙ্গে সংহতি জানানো অনিবার্য।’

পারভেজ আরো বলেন, ‘কাশ্মীরের আজাদির সংগ্রামের সঙ্গে বাংলাদেশের সাংবিধানিকভাবে যুক্ত হওয়াটা ন্যায্য। আমাদের সংবিধানে আছে, পৃথিবীর যেখানে কোনো নির্যাতিত-নিপীড়িত সংগ্রাম হবে, তার সঙ্গে বাংলাদেশ সংহতি জানাবে। কাশ্মীরের সংহতির জায়গা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে মিছিল করেছে এবং সিনেমা প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে, আমি মনে করি, এটি একটি অগ্রসর কর্মসূচি। আমি তার সঙ্গে সংহতি জানাচ্ছি।’

সিনেমা প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে সংহতি প্রকাশ করে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়, ছাত্র ফেডারেশনের ঢাবি শাখার সভাপতি আবু রায়হান খান, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাবি শাখার আহ্বায়ক উলুল উমর অন্তর প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শোয়েব আবদুল্লাহ। বক্তব্য শেষে কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।