জবি ছাত্রলীগে পদ পেতে বিতর্কিতদের দৌড়ঝাঁপ

Looks like you've blocked notifications!
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশী আশরাফুল ইসলাম টিটন, হোসনে মোবারক রিসাদ ও আল আমিন শেখ (বাঁ থেকে)। ছবি : সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। পদপ্রত্যাশীদের অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে চাঁদাবাজি, নিয়োগ ও ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কৃতও হয়েছে অনেকে।

নতুন কমিটিতে কেন্দ্রের মানবিক ও সৃজনশীল নেতাদের স্থান দেওয়া হবে। এ শর্তের কথা শুনে মানবিক ছাত্রনেতা সাজার জন্য অনেককে বিভিন্ন সামাজিক কাজ, পথশিশুদের পাশে দাঁড়ানো ও বিনা মূল্যে পানি বিতরণ করতে দেখা যাচ্ছে।

পদ পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে সাবেক সহসভাপতি আশরাফুল ইসলাম টিটনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া কোতোয়ালি থানায় মামলা আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

জবি ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, জবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এফ এম শরিফুল ইসলামের সব অপকর্মের অন্যতম সহযোগী ছিলেন আশরাফুল। সারা দেশে আলোচিত পত্রিকার  শিরোনাম ‘জবি ছাত্রলীগের সভাপতির টয়লেট দখল’-এর মূল কারিগরও আশরাফুল।

এ বিষয়ে আশরাফুল ইসলাম টিটন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মামলা আমার বিরুদ্ধে হয়েছে সেটা ঠিক আছে। তবে যতক্ষণ না পর্যন্ত মামলার চার্জশিট হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাকে কেউ দোষী বলতে পারবে না। আর টয়লেট দখলের বিষয়টা আমি তখন শরিফ ভাইয়ের সঙ্গে রাজনীতি করতাম ঠিকই। তবে আমি এসবের মধ্যে ছিলাম না।’

পদপ্রত্যাশীদের অন্যতম জবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হোসনে মোবারক রিসাদ। তাঁর বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের সামনে টিএসসিতে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে মারামারি, নিজ বিভাগে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ নানা অভিযোগ আছে। সর্বশেষ চাঁদা নিয়ে মারামারি অভিযোগে ছাত্রলীগ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।

অভিযোগের ব্যাপারে হোসনে মোবারক রিসাদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি তরিকুল-রাসেলের কমিটি ক্যাম্পাস থেকে বিতারিত করায় আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করা হয়েছে। আর আমাকে বহিষ্কার করাটাও ছিল ষড়যন্ত্রমূলক।’

পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে আরেকজন হলেন আল আমিন শেখ। তাঁর বিরুদ্ধে পুরান ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে ফ্রি খাওয়াসহ মাসিক হারে বাস স্টেশন থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

আল আমিন শেখ অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘আমি সভাপতি প্রার্থী হওয়ার পর থেকে এসব গুজব ছড়াচ্ছে। আমি এসবের আশপাশে নেই।’

পদপদপ্রত্যাশীদের আরেকজন আসাদুজ্জামান আসাদ। রাজনীতিতে কখনো সক্রিয় না থাকলেও বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর এলাকার হওয়ায় জবির শীর্ষ পদ পেতে মরিয়া তিনি।

আসাদুজ্জামান আসাদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। প্রতিদিনই রাজনীতি করেছি। আপনি খবর নিয়া দেখেন।’

জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর জবি শাখা ছাত্রলীগের ৩৯ সদস্যের কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে তরিকুল ইসলামকে সভাপতি ও শেখ জয়নাল আবেদীন রাসেলকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কমিটির মেয়াদ ছিল এক বছর। কিন্তু শীর্ষ দুই নেতার পক্ষের লোকজনের মধ্যে কয়েক দফা মারামারি ও সংঘর্ষের পর কমিটি ঘোষণার চার মাসের মাথায় ১৯ ফেব্রুয়ারি কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

জবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটির ব্যাপারে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে নেতিবাচক কোনো নেতাকর্মীর স্থান হবে না। মানবিক ও সৃজনশীল নেতাদের স্থান দেওয়া হবে।