ডাকসু নির্বাচনের বৈধতা দিল সিন্ডিকেট, ভিপি নুরের ক্ষোভ

Looks like you've blocked notifications!
ডাকসুর নির্বাচিত সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূর। পুরোনো ছবি : ফোকাস বাংলা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের যে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ আনা হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে করা তদন্তের পর এই নির্বাচনকে বৈধতা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন ডাকসুর নির্বাচিত সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নূর।

গতকাল বুধবার রাতে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এই সভায় সভাপতিত্ব করেন।

গত ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন নির্বাচনে জালিয়াতি ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি সংগঠন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ওইদিন বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ভোট শুরুর আগেই ব্যালট বাক্স ভর্তি করার অভিযোগে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা।  ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ার পর প্রথমে হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ শবনম জাহানকে প্রত্যাহার ও পরে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া রোকেয়া হল ও সুফিয়া কামাল হলেও ভোট জালিয়াতির অভিযোগে দীর্ঘক্ষণ ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। ওই দিন রাত ৩টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

জালিয়াতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্বাচনের আড়াই মাস পর তদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

সিন্ডিকেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে দাবি করে কয়েকজন প্রার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্ত কমিটি অভিযোগকারী প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের ওপর অনুসন্ধান করে। কিন্তু তারা কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাননি।

এ বিষয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নির্বাচনের অনিয়ম সব জায়গায় প্রকাশিত হয়েছে। সবাই জানে যে, ছাত্রলীগ ওইদিন সাধারণ ছাত্রদের ভোট দিতে দেয়নি। আমরা রোকেয়া হলে ব্যালট দেখতে গেলে তা দেখতে দেওয়া হয়নি। আমাদের ওপর হামলা করা হয়। কুয়েত মৈত্রী হলে সিল ভর্তি ব্যালট পাওয়া যায়। এ ছাড়া, সারা দিন এত জালিয়াতির পরেও ফলাফল ঘোষণা হয় রাত ৩টায়।

নুরুল হক নুর বলেন, এসব অনিয়ম তাদের কাছে ধরা পড়েনি, এটা একটা মিথ্যা। তারা সত্য ঘটনাকে মিথ্যাভাবে উপস্থাপন করেছে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানহানি হয়েছে। একমাত্র নীতিহীন ব্যক্তি ছাড়া কেউ বলবে না যে নির্বাচনে অনিয়ম হয়নি।

নুর আরো বলেন, তারা এই বিষয়টি যেভাবে উড়িয়ে দিয়েছে তাতে দেশের মানুষ হতাশ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে যে কারা আছে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা প্রশ্ন আছে। এখানে আমাদের প্রতিবাদ জানানো ছাড়া আর কিছু করার নেই।

৪২ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার : সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সাত কলেজের শিক্ষার্থীসহ ৪২ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সামাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।