রাতে খেলার মাঠে ডেকে এনে শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিং!

Looks like you've blocked notifications!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন (জেএমএস) বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের রাতে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নিয়ে র‌্যাগিং করার অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানের কাছে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন হেনস্থার শিকার শিক্ষার্থীরা।

৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোমবার বিভাগের আয়োজনে জেএমএস ক্রিকেট প্রিমিয়ার লিগ শুরু হয়। বিকেল ৩টা থেকে খেলা শুরু হয়। ৪৮তম আবর্তনের সব শিক্ষার্থীকে মাঠে যাওয়ার নির্দেশ দেন খেলার আয়োজক ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা।

কিন্তু বিকেলে ৪৮তম আবর্তনের ২০ থেকে ২৫ জন শিক্ষার্থী খেলা দেখতে মাঠে যান। সবাই মাঠে না যাওয়ায় রাত ৮টায় তাঁদের আবর্তনের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। ওই নির্দেশ পেয়ে প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থী মাঠে গেলে ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা তাঁদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখেন। ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম রাজু উত্তেজিত হয়ে ৪৮তম আবর্তনের এক শিক্ষার্থীর দিকে জুতা নিক্ষেপ করেন। এ সময় ৪৮তম আবর্তনের অনেক শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।

পরে প্রক্টরের কাছে কোনো অভিযোগ করতে নিষেধ করে রাত পৌনে ১০টার দিকে ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে চলে যান।

খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। এ সময় ৪৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কাছে ঘটনা বর্ণনা করে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, শহীদ সালাম বরকত হলের তানভীর হোসেন ও হারুনুর রশিদ, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের এনামুল হক তামীম, মওলানা ভাসানী হলের রাইসুল ইসলাম রাজু, তাওসিফ আব্দুল্লাহ, স্টিব সলগা রেমা, জাকির হোসেন জীবন ও মাহবুবুর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া হলের সারা বিনতে সালাহ, প্রীতিলতা হলের সায়মা লিমা, ফাবিয়া বিনতে হকসহ ১২ জন শিক্ষার্থী র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িত ছিলেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বিভাগের সভাপতি এবং এক শিক্ষার্থীর ফোন পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যাই। আমরা উপস্থিত হওয়ার আগেই ৪৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা পালিয়ে যান। পরে আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুনি। র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় যেহেতু সবসময় লিখিত অভিযোগের প্রয়োজন হয় না, তাই আমরা আমাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি।’

এ ব্যাপারে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যায়ন বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাতেই ঘটনা জেনেছি। মঙ্গলবার আমরা উভয় ব্যাচের সঙ্গে বসেছি। ভুক্তভোগীদের লিখিত দিতে বলেছি। আর বিষয়টি যেহেতু প্রক্টরিয়াল টিম তদন্ত করবে, আমরা বিভাগের পক্ষ থেকে তদন্তে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’