‘দখলদারের সময়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও নিরাপদ নয়’
ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম এবং কারচুপি অভিযোগ এনে অনশন করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রবিউল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ঢাবির আরেক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আমজাদ হোসেন।
এরই প্রতিবাদে আজ বুধবার দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান করেন আমজাদ। এ সময় তিনি রবিউলের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘দখলদারের সময়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও নিরাপদ নয়।’ তিনি ওই হামলাকারীকে শনাক্ত করে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
আমজাদ বলেন, ‘সবাই জানে একটি সংগঠন ছাড়া অন্যরা ডাকসু নির্বাচন বর্জন করেছে। কিন্তু যে সংগঠনটি এই নির্বাচনকে বৈধ বলে দাবি করছে তাদের নেতাকর্মীরাই এই হামলা করেছে।’
আমজাদ অভিযোগ করেন, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সূর্যসেন হলের নিজের কক্ষ (২০৯ নম্বর) থেকে তিনতলার একটি কক্ষে (৩২৬ নম্বর) যাচ্ছিলেন রবিউল। এ সময় হলের করিডরে এক ছাত্র তাঁর পথ আটকে রাখে। তিনি ডাকসুর পুনর্নিবাচনের দাবিতে অনশন করেছিলেন কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। রবিউল ‘হ্যাঁ’ বলতেই তাঁকে মারধর এবং গালিগালাজ করা হয়। রবিউল অন্ধ হওয়ায় হামলাকারীকে চিনতে পারেননি বলে জানান তিনি।
আহত অবস্থায় রবিউলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয় বলেও জানান আমজাদ। সেখান থেকে চিকিৎসা শেষে তাকে হলে নেওয়া হয়।
আমজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র।
আহত রবিউল গত ১১ মার্চের ডাকসু নির্বাচনে সমাজসেবা সম্পাদক পদে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে পুনর্নিবাচনের দাবিতে গত ১৪ মার্চ অনশনে যোগ দেন তিনি। তিনি আন্তর্জাতিক বিভাগের ছাত্র এবং মাস্টারদা সূর্যসেন হলের বাসিন্দা।
হামলার বিষয়ে মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘আমি রবিউলকে অভিযোগ দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। তিনি বলতে পারছে না যে কারা হামলা করেছে। যেহেতু তিনি অন্ধ। তিনি হয়তো অভিযোগ দেবেন। অভিযোগ পেলেই আমরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘কেউ যদি অভিযোগ করে তবে আমরা দোষীদের শনাক্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’