রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে দেশের প্রথম নাট্যমেলা। আজ সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে দুই দিনব্যাপী ‘আনর্ত নাট্যমেলা’র উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। থিয়েটার বিষয়ক পত্রিকা ‘আনর্ত’ এই মেলার আয়োজন করেছে।

উদ্বোধন শেষে লিয়াকত আলী লাকী বলেন, ‘থিয়েটারকে নিয়ে নানা রকমের স্বপ্ন আমরা দেখছি। তাই আমাদের বাংলা নাটক নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ সংস্কৃতিটাকে একটা শক্তি হিসেবে পরিচিত করানোর পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই। বাংলা নাটকের শক্তিকে উদ্ধার এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বে সুপ্রতিষ্ঠিত করা হোক আমাদের নাট্য আন্দোলনের অংশ।’

প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আজ আমরা স্বাধীনভাবে শিল্পচর্চা করতে পারছি। বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারি, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বলে আজ আমরা এ অবস্থানে আসতে পেরেছি। অন্যথায় আমরা এমন পরিবেশ পেতাম না।’

রাবির নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি রহমান রাজুর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, নাট্যকার অধ্যাপক মলয় ভৌমিক, বিপ্লব বালা, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবলীনা ত্রিপাঠী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উদ্বোধন শেষে ‘শিল্পযাত্রা’ শিরোনামে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মেলাপ্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে ‘থিয়েটারের নেপথ্য ও প্রত্যক্ষ মানুষ : উপেক্ষায় সম্ভাবনার সূত্র’ শীর্ষক আনর্তবৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে তিনটি নাট্যকথা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আয়োজন করা হয় অন্যরকম গানের আসর ‘নটনটীর ভূমিগীতি’। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে নাট্যকার মলয় ভৌমিকের নির্দেশনায় নাটক ‘বুদেরামের কূপে পড়া’ মঞ্চায়নের মাধ্যমে প্রথম দিনের আয়োজন শেষ হয়।

মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকাল নাট্যচক্র, অ্যাসোসিয়েশন ফর কালচার অ্যান্ড এডুকেশন (এস), আবৃত্তি সংগঠন স্বনন, অনুশীলন নাট্যদল, মুকাভিনয়, তীর্থক নাটক, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার রাজশাহী, উদীচী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ড্রামা অ্যাসোসিয়েশন (রুডা) সংগঠনের স্টল রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের সংগঠনগুলোর মধ্যে আছে রাজশাহী থিয়েটার, রাজশাহীর হেরিটেজ আর্কাইভস, বগুড়া থিয়েটার, নাটোরের ভোর হলো ও ইঙ্গিত থিয়েটার, সান্তাহারের চৌপাশ থিয়েটার ও পাবনার ড্রামা সার্কেল। এ ছাড়া, তথ্য সরবরাহের জন্য মেলায় রয়েছে ‘সূত্রসন্ধান ও টিকেট’ স্টল। রয়েছে ‘বইয়ের হাট’। নাট্যমেলায় আসা দর্শনার্থীরা এখানের নাট্য সংশ্লিষ্ট নানা রকমের বই, ম্যাগাজিন, ছোট পত্রিকা কিনতে কিংবা পড়তে পারবেন।