জাবিতে ছাত্রলীগের দুইপক্ষে সংঘর্ষ, প্রক্টরসহ আহত ৬

Looks like you've blocked notifications!
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার বিকেলে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের সংঘর্ষে আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ছবি : ইউএনবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চল ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেলের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।

আজ বুধবার বিকেলে সংঘর্ষ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেও বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুইপক্ষের নেতাকর্মীদের স্ব স্ব হলে পাঠিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

রাজিব আহমেদ রাসেল কিছুদিন আগে শহীদ সালাম-বরকত হলের সামনে আবু সুফিয়ান চঞ্চলকে মারধর করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বুধবার পহেলা ফাল্গুন উপলক্ষে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রাজিব আহমেদ রাসেল তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। রাজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আছেন এমন খবর শুনে সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল নিজের অনুসারীদের নিয়ে সেখানে যান। এরপর দুই নেতার মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজিবের অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চঞ্চলের আবাসিক হল শহীদ সালাম-বরকত হলে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পরে চঞ্চলের অনুসারীরা হল থেকে বের হয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। এরপর উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ইট পাটকেলের আঘাতে দুপক্ষের অন্তত পাঁচজন কর্মী আহত হন। তাঁরা হলেন ছাত্রলীগ কর্মী সাজ্জাত, বাহার, মোস্তফা, উৎস ও রনি। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেলের অনুসারীরা বুধবার বিকেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চলের আবাসিক হল শহীদ সালাম-বরকত হলে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পরে চঞ্চলের অনুসারীরা হল থেকে বের হয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। ছবি : সংগৃহীত

রাজিব আহমেদ রাসেল অভিযোগ করে বলেন, ‘কিছুদিন আগে কয়েকটি পত্রিকায় চঞ্চলের অপকর্মের নিউজ হয়েছে। তার (চঞ্চল) ধারণা, এসব নিউজ আমি করিয়েছি। আমি ক্যাম্পাসে এসেছি জানতে পেরে সে কেন্দ্রীয় মাঠে আসে। এ সময় তার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা প্রথমে আমার গাড়ির ড্রাইভারকে মারধর করে। পরে তারা আমার দিকে তেড়ে এলে আমার স্ত্রী তাদের আটকানোর চেষ্টা করে। এসময় তারা আমার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমার স্ত্রীকে লাঞ্ছনা করার বিচার চাইব।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল বলেন, ‘আমার সাথে রাজিব ভাইয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে দেখা হয়। আমি ওনাকে দেখে বলি, আপনি এলে ক্যাম্পাসে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়, তাই আপনি চলে যান। এই কথা বলার পর উনি আমার ওপর হামলা করতে ওনার অনুসারীদের ডেকে আনেন। এমন পরিস্থিতিতে আমি ওইখান থেকে চলে আসি। পরবর্তীতে তার অনুসারীরা আমার হলে এসে হামলা চালায়। পরে হলের শিক্ষার্থীরা তাদেরকে প্রতিরোধ করে।’

প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তাতে যে কোনো মুহূর্তে আবার সংঘর্ষ বাধতে পারে। তাই আমরা তিন প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করেছি।’

গত ৩০ জানুয়ারি একটি অনলাইনে ‘৬০ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যে জাবি ছাত্রলীগে কোন্দল!’ শিরোনামে জাবি ছাত্রলীগের সম্পাদক এস এম আবু সুফিয়ান চঞ্চলের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেখানে চঞ্চলের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় সংশ্লিষ্টতা, নারী কেলেঙ্কারী ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ করা হয়। এর আগে ১৫ ডিসেম্বর শহীদ সালাম বরকত হলের সামনে চঞ্চলকে চড়-থাপ্পড় মারেন রাজিব।